Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি নিয়ে বিরোধ

মধুখালীতে হামলায় ইউএনওসহ আহত ৮

Icon

ফরিদপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মধুখালীতে হামলায় ইউএনওসহ আহত ৮

ফরিদপুরের মধুখালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি নিয়ে বিরোধে স্থানীয়দের হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান চৌধুরীসহ ৮ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ইউএনওর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।

আহতদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। তাদের নাম জানা যায়নি।

এলাকাবাসী জানান, নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়। জায়গাটি বর্তমানে বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস হলেও আরএস রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানাধীন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকার নারীরা ওই জমির মালিকানা দাবি করে সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছিলেন। খবর পেয়ে ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী আনসার সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান। আনসার সদস্যরা নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ সময় নারীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। আনসার সদস্যরা রাইফেলের বাঁট দিয়ে কয়েকজন নারীকে আঘাত করেন। এতে এক নারী আহত হন। পরে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের ডাল ভেঙে আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এ সময় স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দেন তাদের ওপর হামলা হয়েছে।

পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং ইউএনও ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলা করেন। ওই সময় আনসার সদস্যরা শটগানের তিন থেকে চার রাউন্ড গুলি ছোড়েন। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে মধুখালী থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অপর আহতরা হলেন-ইউএনওর গাড়িচালক মো. সুমন সেখ, অফিস সহকারী লতিফুল ইসলাম, দেহরক্ষী ও আনসার জমির উদ্দিন, ইমরান হোসেন, আহসান হাবিব ও আইয়ুব আলী। তবে আনসার সদস্যের রাইফেলের বাঁটের আঘাতে যে নারী আহত হয়েছেন তার নাম জানা যায়নি।

ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান জানান, তিনি একটি সালিশে ছিলেন। তিনি জানতেন না ইউএনও ওই এলাকায় এসেছেন। পরে ইউএনওর ফোন পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।

ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি জমি দখল করে রেখেছিল। আমরা সেই জমি উদ্ধার করি এবং সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করি। ঠিকাদার সেই জায়গায় শেড নির্মাণ করে। বুধবার রাতে স্থানীয়রা সেই শেড ভেঙে ফেলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে সেখানে যাওয়ার পর আমার ওপর হামলা হয়।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর জানান, পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাম চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি খাস জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তোলার জন্য ঠিকাদার সেখানে কাজ করছিল।

বুধবার রাতে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘরের কাজ করার সময় ঠিকাদারকে মারধর করেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও ঘটনাস্থলে গেলে তার ওপরও হামলা হয়। এ ঘটনায় যারাই এতে জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হবে। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম