আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী
জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন বিদেশিদের দুয়ারে ধরনা দিচ্ছে আ.লীগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী
জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এখন বিদেশিদের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, রাজনৈতিকভাবে পরাজিত। তারা আজকে বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশ সফরে বেরিয়েছেন, অন্য রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে যদি ক্ষমতায় যেতে পারেন সেজন্য। এটা হচ্ছে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতায় থাকার শেষ চেষ্টা। দেশের মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা দেশের মানুষের কাছ থেকে এত দূরে চলে গেছেন যে, তাদের নিয়ে আর রাজনীতি করতে পারছে না। দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী যতই দেশে দেশে ঘুরে বেড়ান, যতই ধরনা দেন, কোনো লাভ হবে না। এবার পরাজিত হতেই হবে।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সভার আয়োজন করে ‘শেরেবাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশন’।
আমির খসরু বলেন, ‘এই সরকারকে আমি সরকার বলি না। কারণ সরকার হলে নির্বাচিত হতে হয়। কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলা মিলে দেশটাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। এরা এখন ক্ষমতায় থাকার জন্য ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। মুক্তিযুদ্ধে দেশের মানুষ জয়ী হয়েছে, ভাষা আন্দোলনে জয়ী হয়েছে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জয়ী হয়েছে। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশেই দেখা গেছে, মানুষ যখন সিদ্ধান্ত নেয় ও রাজনৈতিকভাবে অবস্থান নেয় তখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো শক্তি জিততে পারে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখনো যদি দেওয়ালের লিখন পড়তে না পারে, তাদের জন্য আমার দুঃখ হয়।’ তিনি বলেন, ‘আজকে যাদের ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, তাদেরও ভাবতে হবে। বিদেশি নিষেধাজ্ঞা নয়, দেশের মানুষই নিষেধাজ্ঞা দেবে। দেশের মানুষ কিন্তু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ভোট চুরির সঙ্গে বিগত দিনে কারা জড়িত ছিল, আগামী দিনে ভোট চুরির সঙ্গে কারা জড়িত হতে যাচ্ছে তাদের মানুষ পর্যবেক্ষণ করছে। একজন একজন করে পর্যবেক্ষণ করছে।’
আমির খসরু বলেন, ‘কোন কোন রাজনৈতিক দল আজকে সুবিধাভোগী, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, কোন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষ তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিশ্ববিবেকও বাংলাদেশের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখছে। তারা তাদের কথাগুলো কিন্তু বলে যাচ্ছে। সুতরাং দেশের মানুষের যে নিষেধাজ্ঞা আসছে সেখান থেকে কেউ রক্ষা পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার দোয়ায় তারেক রহমানের নেতৃত্বে মানুষ আজ জেগে উঠেছে। আন্দোলনে সব মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। আওয়ামী লীগের ভয়টা তো সেখানেই। যে আন্দোলনে দেশের মানুষের সম্পৃক্ততা ও সমর্থন থাকে সে আন্দোলন সফল হবেই। সুতরাং আওয়ামী লীগ আজকে যাদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, তাদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে।’
নতুন রাষ্ট্রপতি প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আজকে একজন রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, দেশের মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। সবচেয়ে বেশি সম্মানের জায়গাটা যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে কী করবেন। অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকলে এসবই তো হবে-এটাই স্বাভাবিক।’
আমির খসরু আরও বলেন, ‘এখন রাজনীতি হচ্ছে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করতে হবে। অব্যাহতভাবে ক্ষমতায় থাকতে হবে। এই ক্ষমতা দখল করার জন্য গুম-খুন করতে হবে, মিথ্যা গায়েবি মামলা দিতে হবে। বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠান দখল করতে হবে। রাষ্ট্রের টাকা লুট করতে হবে এবং তা বিদেশে পাচার করতে হবে। আওয়ামী লীগ এসব করেই ক্ষমতায় আছে। কিন্তু এর পরিণতিটা খুব ভয়াবহ হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. আখতারুল আলম ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।