জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহিদদের প্রতি রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা
যুগান্তর প্রতিবেদন ও বাসস
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কার্যদিবসে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি প্রথমে তিনি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সাহাবুদ্দিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর চৌকশ দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে তিনি স্বাক্ষর করেন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের সালাম গ্রহণের মধ্যদিয়ে প্রথম দিনের কর্মসূচি শুরু করেন নতুন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল মাঠে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের সুসজ্জিত একটি দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়। তিনি গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। বঙ্গভবনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সাভারের উদ্দেশে রওনা হন।
স্মৃতিসৌধের দর্শনার্থী বইতে যা লিখলেন রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি সোমবার রাতে দায়িত্ব গ্রহণের পর মঙ্গলবার সর্বপ্রথম জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। সেখানে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বীরশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধের দর্শনার্থী বইতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন লেখেন, ‘আজকের এ দিনে আমি পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের। বঙ্গবন্ধু সব সময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে পরমতসহিষ্ণুতা, মানবিকতা ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা : রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে সেখানে তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর একটি চৌকশ দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং সেখানে একটি হলোগ্রাফিক ভিডিও দেখেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রিয় মাতৃভাষা বাংলার জন্য শাহাদত বরণকারী বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আজ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আজ বুধবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তিনি শ্রদ্ধা জানাবেন। সেখানে তিনি ফাতেহা পাঠ করবেন এবং বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাতে অংশ নেবেন। মাজার প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী বইয়ে তিনি স্বাক্ষর করবেন। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকশ দল সেখানে তাকে অনার গার্ড প্রদান করবে। মোটর শোভাযাত্রায় পদ্মা সেতু হয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়া যাবেন। বিকালে বঙ্গভবনে তার ফেরার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতিকে বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন : বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। মঙ্গলবার বঙ্গভবনের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়- রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো, মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান হাজি আহমেদ শাহ আল মুসতাইন বিল্লাহ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ইতালির রাষ্ট্রপতি সার্জিও মাত্তারেল্লা, ইরানের রাষ্ট্রপতি সাঈদ ইব্রাহিম রাইছি ও সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি হালিমা ইয়াকুব।