Logo
Logo
×

শেষ পাতা

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল কেলেঙ্কারি

গাফিলতি প্রমাণিত পাঁচ কর্মকর্তার

তদন্ত প্রতিবেদন: ব্যবস্থা নিতে ফাইল চালাচালি শুরু * সচিবের হাতে দুই কমিটির প্রতিবেদন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গাফিলতি প্রমাণিত পাঁচ কর্মকর্তার

ফাইল ছবি

পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফল তৈরির সঙ্গে জড়িত কারিগরি দল এবং প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের গাফিলতির কারণে সতর্কতার সঙ্গে ফল তৈরির কাজটি সম্পন্ন হয়নি। এ কারণে ফলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে। এমন ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ জনকে দায়ী করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ। সোমবার বিকালে তিনি যুগান্তরকে বলেন, কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে। তারা এই ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে। পাশাপাশি গাফিলতিতে জড়িতদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয়ের আরেকটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দুই কমিটির একটি রোববার অপরটি বৃহস্পতিবার শেষ বিকালে প্রতিবেদন জমা দেয় মন্ত্রণালয়ে। কমিটি ৫ জনকে চিহ্নিত করেছে, যাদের এই ফল তৈরিতে গাফিলতি প্রমাণিত হয়েছে। ওই ৫ জনের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক, তিনজন পরিচালক এবং কম্পিউটার সেলের প্রধান আছেন। এদের মধ্যে ৪ জন সরাসরি জড়িত। আর দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে মহাপরিচালক জড়িত। চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

ফল তৈরির পর প্রকাশের দিন মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করেন। বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে নেননি। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ও অবহেলা না থাকলে বৃত্তি পরীক্ষার মতো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এমন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় ভুলের ঘটনা ঘটত না। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ফাইল চালাচালি শুরু হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান।

২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এই বৃত্তির ফল ঘোষণা করেন। এর ৪ ঘণ্টার মধ্যে কারিগরি ত্রুটির কারণ উল্লেখ করে ফল স্থগিত করে ডিপিই। ফল নিয়ে দেশব্যাপী বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ১ মার্চ রাত ১০টার পরে সংশোধিত ফলপ্রকাশ করা হয়। প্রায় সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থী এবার বৃত্তি পেয়েছে। আর পরীক্ষা দিয়েছে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ শিক্ষার্থী।

সূত্র জানায়, কমিটি বৃত্তির ফল তৈরির সঙ্গে জড়িত কারিগরি দলের অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে গাফিলতি পেয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, জেলা থেকে পাঠানো ফল সমন্বয়ের আগে সতর্কতার সঙ্গে কোড যাচাই করেনি। যেহেতু কম্পিউটারের যে কোনো প্রোগ্রাম কোড তৈরির মাধ্যমে চালাতে হয়। তাই কোডগুলোর দিকে নজর রাখলে সমস্যা এড়ানো যেত। এছাড়া ফল তৈরির ক্ষেত্রে খাতার কোডিং এবং ডি-কোডিং প্রক্রিয়া থাকে। যেহেতু সারা দেশে জেলায় জেলায় আলাদা কাজ হয়েছে, তাই একই কোড কম্পিউটার সৃষ্টি করতে পারে, যা ম্যানুয়ালি ধরে ধরে যাচাই করা সম্ভব ছিল। আর এবারই প্রথম ‘ডিপিএমআইএস’ নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বৃত্তির ফল প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সফটওয়্যারে কোডিং বিষয়টি মাথায় না থাকার কারণে এমনটা ঘটেছে। তবে সফটওয়্যারে কোনো কারিগরি ত্রুটি ছিল না।

যদিও তদন্ত কমিটির কাছে কারিগরি দলের সদস্যরা দাবি করেন, ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি কর্মকমিশনের ফলেও এমন সমস্যা হয়েছিল। আর দীর্ঘদিন পর ফল তৈরির সফটওয়্যার ব্যবহারে এ ভুল হয়েছে। বিশেষ করে সময় স্বল্পতা বড় সমস্যা তৈরি করেছে।

সূত্র আরও জানায়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে সে জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম