ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন
নতুন হলে উঠলেন ফুলপরী, ক্লাসে ফিরবেন আজ
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন নতুন হলে উঠেছেন। রোববার দুপুর ১২টায় বাবা আতাউর রহমানের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। পরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন। ১২ ফেব্রুয়ারির পর এক মাস শ্রেণি কার্যক্রমেও অংশ নিতে পারেননি তিনি। আজ ক্লাসে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন ফুলপরী।
ক্যাম্পাসে ফেরার অনুভূতি জানতে চাইলে ফুলপরী যুগান্তরকে বলেন, মনে হচ্ছে আজ প্রথম ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রথম দিনের মতোই অনুভূতি হচ্ছে। সোমবার (আজ) থেকে আমি নতুনভাবে ক্লাসও শুরু করব। কোনোরকম ভয়ভীতি বা সংকোচ নেই।
এ সময় বাবা আতাউর রহমান মেয়ের মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করে বলেন, পাঁচ বছর পরে যেন ভালোভাবে বাসায় ফেরে আমার মেয়ে। ও আজ থেকে হলেই থাকবে। এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মিয়া রাসিদুজ্জামান বলেন, আবেদন করার পর সেদিনই একটি কক্ষ তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওইদিন কক্ষে কিছু মালামাল রেখে তিনি বাড়ি চলে যান। আজ সেই কক্ষে উঠেছেন। চিফ মেডিকেল অফিসারকে বলা হয়েছে তার স্বাস্থ্যগত বিষয় পরীক্ষা করতে। হলে তাকে যেন কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয় সে বিষয়টি দেখভাল করা হবে। এর আগে উচ্চ আদালত থেকে পছন্দের হল বরাদ্দের নির্দেশের পর ৪ মার্চ ক্যাম্পাসে এসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলে কক্ষ বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন ফুলপরী। পরে ওই হলের একটি কক্ষ তাকে বরাদ্দ দেয় কর্তৃপক্ষ।
সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারে তদন্ত কমিটি গঠন : দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটিকে সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছিল হল প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় ফুটেজ উদ্ধারে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসান-উল-আম্বিয়াকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া আরেকটি অফিস আদেশে, আইসিটি সেলের অধীনে পরিচালিত সিসি ক্যামেরা সিস্টেমের পাসওয়ার্ড ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চাবি জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের কাছে হস্তান্তর করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অ্যান্টি র্যাগিং ভিজিল্যান্স কমিটি গঠন : র্যাগিং প্রতিরোধে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট অ্যান্টি র?্যাগিং ভিজিল্যান্স কমিটি গঠন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এ কমিটি হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক আগামী দুই বছর কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের নির্যাতন বন্ধ করতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ও স্কোয়াড গঠনের নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। তিন মাসের মধ্যে এ কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে এ আদেশের তিন বছর পর ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করেছে ইবি প্রশাসন। অফিস আদেশে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ অধিকতর সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদকে আহ্বায়ক করে ও উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুল হান্নানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা ও আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. রেবা মন্ডল।