অমর একুশে বইমেলা ২০২৩
শুরু শেষ সময়ের কেনাকাটা
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সন্ধ্যায় হালকা ঠান্ডা বাতাস। এর মধ্যে মাইকে বৃষ্টির পূর্বাভাস। আকাশ মেঘলা কিনা বোঝার উপায় ছিল না। কিছুক্ষণ পরই বাঁকা চাঁদের শোভা জানান দেয় আকাশ মেঘলা নয়। আর তাতেই কিছুটা স্বস্তি মেলে। এভাবেই বৃষ্টি আসার দোলাচল নিয়ে বৃহস্পতিবার বইমেলায় চলে কেনাকাটা।
মেলায় কথাপ্রকাশের প্যাভিলিয়নে বেশ কিছু প্রবন্ধের বই সংগ্রহ করছিলেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা আরিফ তরফদার। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যারের নতুন বই প্রতিবছর এ প্রকাশনা থেকে প্রকাশ হয়। স্যারের নতুন বইয়ের পাশাপাশি আরও কিছু বই সংগ্রহ করেছি।’ আর বাবা একরামুলের হাত ধরে বইমেলায় আসে ৭ বছরের তানহা। আনিসুল হকের গুড্ডুবুড়ার কয়েকটা বই কিনেছে সে।
বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একঝাঁক কিশোর কিশোরী ঘিরে রাখে কথাসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে। বইয়ে অটোগ্রাফ নেওয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে সেলফি তুলতেও ব্যস্ত ছিল তারা।
আজ অমর একুশে বইমেলার ২৪তম দিন ও শেষ শুক্রবার। বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। শিশু প্রহর থাকবে বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
বিকালে মেলার মূলমঞ্চে হয় জন্মশতবর্ষে বঙ্গবন্ধুবিষয়ক কথাসাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র এবং জন্মশতবর্ষে বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণা ও মুক্তগদ্য চর্চা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিল্টন বিশ্বাস ও ফরিদ কবির। আলোচনায় অংশ নেন রফিকুর রশীদ, সুভাষ সিংহ রায়, সরিফা সালোয়া ডিনা, মাসুদ পথিক প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন গোলাম কুদ্দুছ।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনৈতিক আদর্শ ও মৃত্যুঞ্জয়ী ভূমিকা উপস্থাপিত হয়েছে শতাধিক ছোটগল্প, তিরিশের অধিক উপন্যাস, পঞ্চাশটির মতো মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্রে। বর্তমান শতাব্দীতেও বাঙালি সাহিত্যিকদের কাছে সৃষ্টিশীলতার এক অফুরান উৎস বঙ্গবন্ধু। অপর দিকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত গবেষণা, যত মুক্তগদ্য ও স্মৃতিগদ্য লেখা হয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে এত গবেষণা এবং এত গ্রন্থ রচিত হয়েছে বলে জানা নেই।
আলোচকরা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুবিষয়ক কথাসাহিত্য-নাটক-চলচ্চিত্র-মুক্তগদ্য ও স্মৃতিগদ্য সংখ্যায় বিপুল, তবে গুণগত উৎকর্ষের বিষয়টিও এক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে। জন্মশতবর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেসব রচনাকর্ম আমরা উপহার পেয়েছি এখন প্রয়োজন তার যথাযথ বিশ্লেষণ।’
এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কামাল চৌধুরী, জহরত আরা, মোস্তফা আল-মেহমুদ-রাসেল ও আনজীর লিটন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন ভাস্কর রাশা, দুলাল সরকার, কামরুজ্জামান, রাজীব কুমার সাহা, মাহবুবা ফারুক, আতিক আজিজ। আবৃত্তি করেন শফিকুল ইসলাম বাহার, চৌধুরী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জিনিয়া ফেরদৌস রুনা ও অনন্যা সাহা।
এছাড়া ছিল হাসান আবদুল্লাহ বিপ্লবের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঘাসফুল’, শাহিনুর আল-আমিনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সম্প্রীতি সংস্কৃতি সংসদ’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ঝুমা খন্দকার, চঞ্চল খান, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, অণিমা রায়, মঞ্জু সাহা, মিরা মন্ডল, আশরাফ মাহমুদ।
নতুন বই : এদিন বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৭৮টি। চৈতন্য প্রকাশনী থেকে এসেছে মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবের ‘কার্ভিং করাপশন অব পুলিশ ইন অর্ডার টু এনশিওর গুড গভারনেন্স ইন বাংলাদেশ’, কথাপ্রকাশ থেকে জালাল ফিরোজ ও সাব্বীর আহমেদ সম্পাদিত ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পক্ষে বিপক্ষে’, গাঙুড় প্রকাশন থেকে এসেছে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী লেখক সাজেদুল চৌধুরী রুবেলের কবিতার বই ‘ফেরাবো না তেমাকে’, আজব প্রকাশ থেকে এসেছে মিলু আমানের উপন্যাস সংকলন ‘রকযাত্রা অমনিবাস’।