Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দশ দফা মেধা তালিকা প্রকাশ করেও আসন শূন্য

ইবিতে গলার কাঁটা গুচ্ছ ভর্তি

Icon

সরকার মাসুম, ইবি

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইবিতে গলার কাঁটা গুচ্ছ ভর্তি

সাত মাসেও শেষ হয়নি গুচ্ছভুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্নাতক ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম। টানা দশ দফায় মেধা তালিকা প্রকাশ করেও প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসন শূন্য থাকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়েছে। ভোগান্তি কম হওয়ার বদলে চলমান এ পদ্ধতি যেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

একই সঙ্গে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্বকীয়তা হারিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এবারের গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ না নিতে চাইলেও পরে শর্তসাপক্ষে অংশ নেয়। তবে সে শর্ত পূরণ করতে না পারায় ফের গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দেবে শিক্ষক সমিতি। আজকের সভায় এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, গুচ্ছের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চার মাস আগে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে ক্লাস শুরু করেছে। বিপরীতে গুচ্ছভুক্ত ইবি আসনই পূর্ণ করতে পারছে না। একই অবস্থা গুচ্ছভুক্ত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। ফলে আসন ফাঁকা রেখেই ক্লাস শুরু করেছে ইবিসহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। গত বছরও ইবিতে টানা সাতটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তারপরও সব আসনে শিক্ষার্থী মেলেনি। তখন প্রায় ১০০টি আসন খালি রেখে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করেছিল কর্তৃপক্ষ। এবার ৪৮১ ফাঁকা আসনের বিপরীতে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের জুলাইয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আগস্টে ফল প্রকাশের পর কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদাভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২ নভেম্বর প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে ইবি। সর্বশেষ দশম মেধাতালিকার চূড়ান্ত ভর্তি শেষে ৪৮১ আসন খালি থাকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ না করে আসন খালি রেখেই ক্লাস শুরু করতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। এতে ভর্তির আগেই সেশনজটের কবলে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অভিভাবকরা বলছেন, এই দীর্ঘসূত্রতার পেছনে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া দায়ী। ভোগান্তির পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে বেড়েছে সেশনজট। ফলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের সন্তানেরা পিছিয়ে পড়ছে। এর পরিবর্তন প্রয়োজন।

একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী বলেন, গুচ্ছ ভর্তির কারণে ইবির স্বতন্ত্রতা ও জৌলুস হারিয়েছে। ইবি যতটা এগিয়ে গিয়েছিল, দুইবার গুচ্ছে যাওয়ায় অনেকটা পিছিয়ে গেছে। গুচ্ছ পদ্ধতির অসংগতির ফলেই এবার শিক্ষার্থী সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। দুইবার ধাক্কা খেয়েও কর্তৃপক্ষের টনক না নড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আরও তলানিতে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে বেশি কালক্ষেপণ হচ্ছে। ভর্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আগে পরিকল্পনা না করে শেষের দিকে এসে তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। এছাড়া বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় ভোগান্তি আরও বাড়ছে।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার যুগান্তরকে বলেন, অধিকাংশ শিক্ষক গুচ্ছে অংশ না নেওয়ার পক্ষে। গত বছর শিক্ষক সমিতি যেসব শর্ত দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ তা পূরণ করতে পারেনি। উলটো ভোগান্তি আরও বেড়েছে। শনিবার (আজ) শিক্ষক সমিতির সভায় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরে তা উপাচার্যের কাছে পাঠানো হবে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা সাপক্ষে যেন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমাদের আর্থিক প্রয়োজনে সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী একটা ঘোষণা দিলে আমরা চাইলেই এখান থেকে বের হতে পারব না। গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় একটি আইনি জটিলতার কারণে কিছুদিন দেরি হয়েছে। যে সময়ক্ষেপণ হয়েছে তা আমরা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম