বিএনপির দশ দফা
জনমত গড়তে তৃণমূলে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা
তারিকুল ইসলাম
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গণসমাবেশ ও গণমিছিলের পর এবার তৃণমূল সফরে যাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। আন্দোলনের ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফার রূপরেখা নিয়ে জনমত গঠন ও প্রচারের লক্ষে এই সফর। এজন্য সব সাংগঠনিক জেলায় নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তারা আলোচনা সভা, সেমিনারের পাশাপাশি লিফলেট ও বুকলেট বিতরণ করবেন। কেন্দ্রীয় নেতারা আলোচনা সভা ও সেমিনারে অংশ নিয়ে এ দুই বিষয়ে বিশদ আলোচনা, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দেবেন। ১১ জানুয়ারি ঘোষিত সারা দেশে গণঅবস্থান কর্মসূচির আগেই এসব কর্মকাণ্ড শেষ করবে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
রোববার দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে পাঠানো এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি কর্মসূচিতে আরও থাকবেন জেলা/মহানগরের অধিবাসী জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা/মহানগর কমিটির সব নেতা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের ৫ শীর্ষ নেতা। এছাড়া সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের জেলা/মহানগরের ৫ জন এবং পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা এবং সংশ্লিষ্ট জেলা/মহানগরের নেতাদের সঙ্গে কর্মসূচির সার্বিক সমন্বয় করবেন। পাশাপাশি তারাও উপস্থিত থাকবেন। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, আন্দোলনের ১০ দফা ও রাষ্ট্রের মেরামতের ২৭ দফার লিফলেট ও বুকলেট বিতরণে স্থানীয় পর্যায়ে নেতাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করবে। তারা সরকারি/বেসরকারি কর্মকর্তা (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসিসহ অন্যান্য), সুশীল সমাজ, পেশাজীবী (সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষিবিদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, ধর্মীয় নেতা, সাংস্কৃতিক কর্মী, মানবাধিকার কর্মী) ও অপরাপর দলসহ অন্যদের মধ্যে তা বিতরণ করবেন। এবং এই লিফলেট ও বুকলেট ১০ দিনের মধ্যে বিবরণ করতে হবে।
এছাড়া জেলা/মহানগর, উপজেলা/পৌর/থানাসহ অন্যান্য ইউনিটের নেতারা জনসভা, কর্মিসভা, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানের সময় ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবেন এবং এর পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবেন।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি কেন ১০ দফা এবং ২৭ দফা দিয়েছে, এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকেও বোঝাতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার যেসব দুর্নীতি-দুঃশাসন, প্রতিহিংসা এবং দখলের রাজনীতি করেছে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তা করবে না। এজন্য দলীয় কর্মীসহ সবাইকে বোঝাতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জেলা এবং মহানগর নেতারা সভা আহ্বান করবেন, সেখানে উপজেলা-পৌরসহ বিভিন্ন কমিটির নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবে। এই সভায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেখানে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ১০ দফা এবং ২৭ দফা সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরবেন।
যেসব কেন্দ্রীয় নেতা সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে : আজ ঢাকা মহানগর উত্তর থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ৩ জানুয়ারি মানিকগঞ্জে থাকবেন ড. আব্দুল মঈন খান, ঠাকুরগাঁওয়ে নজরুল ইসলাম খান, জামালপুরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ফেনীতে মো. শাহজাহান ও ঝিনাইদহে নিতাই রায় চৌধুরী। ৪ জানুয়ারি নীলফামারী ও সৈয়দপুরে নজরুল ইসলাম খান, লক্ষ্মীপুরে বরকতউল্লাহ বুলু, নওগাঁয় রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও শেরপুরে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। ৫ জানুয়ারি সিলেট জেলা ও মহানগরে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নরসিংদীতে আবদুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইলে মো. শাহজাহান, পাবনায় আব্দুল আউয়াল মিন্টু, দিনাজপুরে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বরগুনায় অ্যডভোকেট জয়নুল আবেদীন, খাগড়াছড়িতে আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও জয়পুরহাটে ড. মামুন আহমেদ। ৬ জানুয়ারি পটুয়াখালীতে ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর, হবিগঞ্জে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নড়াইলে নিতাই রায় চৌধুরী, গাজীপুর মহানগরে আমান উল্লাহ আমান, নাটোরে মিজানুর রহমান মিনু, রাজবাড়ীতে ইসমাইল হোসেন জবিউল্লাহ, মুন্সীগঞ্জে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাবিব উন নবী খান সোহেল ও রাঙামাটিতে মাহবুবের রহমান শামীম। ৭ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দক্ষিণে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মাগুরায় বরকতউল্লাহ বুলু, মৌলভীবাজারে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কুষ্টিয়ায় শামসুজ্জামান দুদু, সাতক্ষীরায় আহমদ আযম খান, বাগেরহাটে নিতাই রায় চৌধুরী, ফরিদপুর জেলা ও মহানগরে অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চুয়াডাঙ্গায় জয়নাল আবেদীন ফারুক, চাঁদপুরে মনিরুল হক চৌধুরী, নেত্রকোনায় অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ভোলায় বিলকিস জাহান শিরিন ও বান্দরবানে ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ৮ জানুয়ারি কুমিল্লা মহানগর, দক্ষিণ ও উত্তর জেলায় নজরুল ইসলাম খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বগুড়ায় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কিশোরগঞ্জে আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মাদারীপুরে শাহাজাদা মিয়া, কক্সবাজারে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও গাজীপুর জেলায় আব্দুস সালাম আজাদ। ৯ জানুয়ারি ঢাকা জেলায় বেগম সেলিমা রহমান, সিরাজগঞ্জে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঝালকাঠিতে এয়ায় ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, লালমনিরহাটে শামসুজ্জামান দুদু, কুড়িগ্রামে আব্দুল হাই শিকদার, সুনামগঞ্জে খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, পিরোজপুরে হাবিব উন নবী খান সোহেল, গাইবান্ধায় হারুন অর রশিদ, শরীয়তপুরে শামা ওবায়েদ ও মেহেরপুরে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। ১০ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে থাকবেন আসাদুল হাবিব দুলু এবং রাজশাহী জেলা ও মহানগরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।