
প্রিন্ট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
বাংলাদেশ স্টার্টআপ কানেক্ট ২০২৫
সংশোধন হচ্ছে টেলিযোগাযোগ আইন
দেশে আর কখনো শাটডাউন হবে না ইন্টারনেট : ফয়েজ তৈয়্যব

সাইফ আহমাদ
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের দিন শেষ-এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে সামনে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। জনগণের তথ্যপ্রযুক্তি অধিকার রক্ষায় এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নেওয়া হয়েছে চারটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।
৭ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুরু হওয়া চারদিনের ‘বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫’-এর প্রথম সেমিনার ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ কানেক্ট ২০২৫’-এ এসব তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা) প্রকৌশলী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি জানান, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে চার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। প্রথমত ‘সাইবার সেফটি অর্ডিন্যান্স’-এ ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বিগত সরকারের করা ইন্টারনেট শাটডাউন সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এস ও পি) বাতিল করা হয়েছে। তৃতীয়ত, কৃত্রিম উপগ্রহ প্রযুক্তিভিত্তিক এনজিএসও গাইডলাইনে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। চতুর্থত, ২০০১ ও ২০১০ সালের টেলিযোগাযোগ আইনে থাকা ইন্টারনেট শাটডাউনের সুযোগগুলো বাতিল করে সংশোধন করা হবে আইনটি।
বৈশ্বিক সংযুক্তির সুযোগে উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে দেশের স্টার্টাপ ইকো সিস্টেমের উন্নয়ন করা যায় তা নিয়েই আলোচনা হয় এ সেশনে।
সেমিনারে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও এটি গুরুত্বসহকারে বিবেচিত হচ্ছে’। তিনি জানান, সরকার এ বিষয়ে গভীরভাবে কাজ করছে। কারণ, শুধু নাগরিকরাই নয় ব্যবসায়িক কমিউনিটিও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে নিয়মিত শলা-পরামর্শ করছি’, বলেন তিনি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের মতে, একটি আধুনিক, নিরাপদ এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গঠনে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। তাই সরকার বিষয়টিকে বৈশ্বিক ব্যবসায়িক বাস্তবতা ও স্টার্টআপ সংস্কৃতির পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করে এগোচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিডা’র নির্বাহী পরিচালক আশিক মোহাম্মদ বিন হারুন। উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ এবং স্থায়ী বিনিয়োগ পরিবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যামান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ ইকো সিস্টেমের সংস্কারের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, চলমান বিনিয়োগ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ ইস্যু কোনো প্রভাব ফেলবে না বরং বিনিয়োগকারীদের আরও দৃঢ় ও আস্থাভাজন করবে।
বাংলাদেশকে বিদেশি আইটি স্টার্টআপদের জন্য বিনিয়োগবান্ধব গন্তব্য হিসাবে গড়ে তুলতে একাধিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আইসিটি বিভাগ এমনটাই জানান বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক আইটি স্টার্টআপগুলোকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বাজারে নিয়ে আসতে নিরলসভাবে কাজ করছি’। সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০-৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেখান থেকে শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হবে। ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে বাংলাদেশের বাজারকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে হলে সরকারি-বেসরকারি সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন’ তিনি একে কেবল নীতিগত নয়, কৌশলগত অগ্রাধিকার হিসাবেও দেখার পরামর্শ দেন। বিদেশি স্টার্টআপদের জন্য বাংলাদেশের উদীয়মান ডিজিটাল ইকোসিস্টেম এক বিশাল সুযোগ মনে করেন।