Logo
Logo
×

আইটি বিশ্ব

বাতিল হচ্ছে বিডিসিসিএলে ইন্টারনেট ও ক্লাউডের ‘অসম’ চুক্তি

চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং বাতিল হতে পারে -শীষ হায়দার চৌধুরী, সচিব, আইসিটি বিভাগ

Icon

সাইফ আহমাদ

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত গৃহীত প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করছে বর্তমান সরকার। আওয়ামীদলীয় প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগিয়ে নেওয়া, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর অংশ হিসাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্কের বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) ইন্টারনেট ও ক্লাউড সেবা সম্পর্কিত চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সূত্রমতে, পর্যালোচনা শেষে এমন অসম চুক্তিগুলো বাতিল হতে পারে।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে বিডিসিএলে ইন্টারনেট সরবরাহের জন্য প্রথমবারের মতো লেভেল-থ্রি কাজ পায়। ২০২২ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে নতুন দরপত্র ছাড়া আরও তিন বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রশাসনে বিডিসিসিএলের এমডি আবু সাঈদ চৌধুরী। চুক্তিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ চুক্তির আওতায় ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত লেভেল-থ্রি ৪১ কোটি ৪ লাখ টাকা পাবে। বিডিসিসিএলের তৎকালীন এমডি আবু সাঈদ এবং লেভেল-থ্রির এমডি আহমেদ জুনায়েদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

এদিকে লেভেল-থ্রি ক্যারিয়ারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। অভিযোগ রয়েছে, তার প্রভাবেই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি দরপত্র পেয়েছে।

বিডিসিসিএলের এমন অসম ও নিয়মবহির্ভূত আরেকটি আলোচিত চুক্তি করে ওরাকলের সঙ্গে। কোনো দরপত্র ছাড়াই ২০২১ সালে ওরাকলের সঙ্গে ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ২০৭ কোটি টাকা) ক্লাউড সেবার চুক্তিটি করেন তৎকালীন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আলোচিত এ চুক্তিটি নিয়েও রিভিউ চলছে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ওরাকল কার্যক্রম শুরু হয় আড়াই বছর পর। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে স্থাপিত ওরাকলের ক্লাউড সেবা নিতে থাকে বিডিসিসিএল, যা ছিল কোনো রকম দরপত্র বা নতুন চুক্তি ছাড়াই। ২০২২ সালে, পলকের তৎকালীন প্রশাসন ওরাকলকে এক বছরের সেবার জন্য ৪ লাখ ২০ হাজার ডলার (৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা) পরিশোধ করে, যা সেসময়ের বাজারদর অনুযায়ী ছিল একটি বড় অঙ্কের অর্থ। তবে এ চুক্তি নিয়ে আইসিটি বিভাগের পর্যালোচনায় ‘অসম’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের সচিব ও বিডিসিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, এ চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং বাতিল হতে পারে। নতুন দরপত্র ছাড়া লেভেল থ্রি দ্বিতীয় দফায় কাজ পাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের ঠিকাদারের কাজে সন্তুষ্ট হলে এমনটা করা যায়। তবুও পুরো বিষয়টি দেখা যাবে। খুব সম্ভবত লেভেল-থ্রির সঙ্গে চুক্তিটি থাকবে না। এ বিষয়ে জানতে লেভেল থ্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহেমদ জুনায়েদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে বারবার মোবাইল ও ওয়াসআপে ম্যাসেজ এবং কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।

তবে লেভেল-থ্রিতে তৌফিক হামিদের ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব থাকলেও অন্য একটি গণমাধ্যমে অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আহমেদ জুনায়েদ। পাশাপাশি বিডিসিসিএলের সঙ্গে লেভেল-থ্রির চুক্তি বাতিলের বিষয়েও কিছু জানেন না বলে জানান তিনি। আহমেদ জুনায়েদ বলেন, বিডিসিসিএলের সঙ্গে আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। চুক্তি বাতিল হবে বা এ ধরনের কিছু এখনো জানি না। আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার আইসিটি খাতে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং এরই অংশ হিসাবে এ চুক্তি মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম