
প্রিন্ট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩০ এএম
হজ পালনে দেরি করা উচিত নয়

মুফতি হেলাল উদ্দিন হাবিবী
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম ও ফরজ ইবাদত। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা মুকাররামার নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে ইসলামি শারিয়াহ মোতাবেক নির্দিষ্ট কিছু কর্মকাণ্ড সম্পাদন করাকে হজ বলা হয়। হজের মৌসুমে পবিত্র মক্কা নগরীতে যাওয়া-আসার এবং ওই সময়ে পরিবারের ব্যয়ভার বহনের আর্থিক সচ্ছলতা ও হজের সফর করার দৈহিক সক্ষমতা থাকলে জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ।
প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উচিত মহান ও ফজিলতপূর্ণ এ আমলটি আদায়ে বিলম্ব না করা। কেননা আজকের শারীরিক ও আর্থিক সক্ষমতা পরবর্তী সময়ে নাও থাকতে পারে। এমনকি যে কোনো সময় এসে যেতে পারে মৃত্যুর ডাক। চিরদিনের জন্য হাতছাড়া হতে পারে এ মহাসৌভাগ্য তাই সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ এ ইবাদতটি পালনের ব্যাপারে বিলম্ব করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ইসলাম যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি হজ পালনে উৎসাহিত করেছে এবং বিলম্বে হজ পালনের প্রতি কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশিষ্ট সাহাবি হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ফরজ হজ আদায়ে তোমরা বিলম্ব করো না। কেননা তোমাদের জানা নেই, পরবর্তী জীবনে তোমরা কী অবস্থার সম্মুখীন হবে। (মুসনাদে আহমদ)।
নবি করিম (সা.) আরও ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজের ইচ্ছা করেছে সে যেন তাড়াতাড়ি তা আদায় করে নেয়। (আবু দাউদ)।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও যে হজ না করে মারা যায়, সে ইহুদি বা খ্রিষ্টান হয়ে মারা যাক তাতে আমার কোনো পরোয়া নেই। (সুনানে তিরমিযি)।
পক্ষান্তরে যারা মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ আদায় করে, মহানবি (সা.) তাদের ব্যাপারে গুনাহ মাফ ও জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এমনভাবে হজ আদায় করল যে, কোনোরূপ অশ্লীল কথা বা গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়নি, সে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে। (সহিহ বুখারি)।
প্রিয় পাঠক! কোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তি যদি হজ আদায় না করে, পরবর্তী সময়ে সে যদি শারীরিক বা আর্থিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তবুও তার ওপর হজের বিধান বহাল থাকবে। সুতরাং তার জন্য আবশ্যক হলো, কাউকে তার পক্ষ থেকে বদলি হজে পাঠিয়ে নিজের হজব্রত পালন করে নেওয়া। কোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তি যদি হজ আদায় না করে মারা যায়, তবে তার ওয়ারিশদের উচিত বদলি হজ আদায়ের মাধ্যমে তাকে দায়মুক্ত করা।