Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

নামাজ পড়ুন একাগ্রতার সঙ্গে

Icon

আব্দুর রাকীব মাসুম

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নামাজ পড়ুন একাগ্রতার সঙ্গে

নামাজ ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। নামাজ মহান আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। কেয়ামতের দিন বান্দার আমলগুলোর মধ্যে প্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। নামাজের হিসাব সঠিক হলে অন্যান্য আমলের হিসাবও সহজ হবে।

কুরআনুল কারিমের অন্তত ৮২টি স্থানে নামাজের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। নামাজকে গুরুত্বসহকারে আদায় করা, তার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য একান্ত জরুরি।

মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজগুলোর প্রতি যত্নবান হও; বিশেষভাবে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে’। (সূরা বাকারা আয়াত ২৩৮)। হাদিস শরিফে মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ, সুতরাং যে নামাজ কায়েম করল সে দ্বীনকেই কায়েম করল। আর যে নামাজকে ধ্বংস করল, সে দ্বীনকেই ধ্বংস করল’। (শুআবুল ইমান হাদিস নং ২৫৫০)।

নামাজ আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য এবং সঠিকভাবে আদায় হওয়ার জন্য নামাজে একাগ্রতা, একনিষ্ঠতা এবং বিনয় জরুরি। যাকে আরবি ভাষায় ‘খুশু খুযু’ বলা হয়। এ খুশু খুযু বা একাগ্রতা ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ‘দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য, যারা স্বীয় নামাজের ব্যাপারে উদাসীন’। (সূরা মাউন, আয়াত ৪-৫)। অন্যত্র এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাজে বিনয়-নম্র’। (সূরা মুমিনুন আয়াত নং ১-২)।

অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তারা নামাজে দণ্ডায়মান হয়, তখন তারা অত্যন্ত অলসতার সঙ্গে দণ্ডায়মান হয়। শুধু লোকদের দেখায়। উপরন্তু তারা আল্লাহর স্মরণ খুব কমই করে থাকে’। (সূরা নিসা আয়াত নং ১৪২)।

এক হাদিসে নবিজি (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমাদের কেউ যদি নামাজে দাঁড়ায়, সে যেন তার মনোযোগ আল্লাহর দিকে নিবদ্ধ রাখে’। (বুখারি ও মুসলিম)। আরেক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজ পড়ে, তার নামাজে যতটুকু মনোযোগ থাকে, কেবল সেই অংশই আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হয়’। (মুসনাদে আহমদ)।

এমন অনেক আয়াত ও হাদিসে নামাজের একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যার দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, যার নামাজে একাগ্রতা বা খুশু-খুযু নেই, তার নামাজ অর্থহীন ও অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ একাগ্রতা ও মনোযোগ আমরা কীভাবে অর্জন করব? তার সমাধানও আমরা হাদিস শরিফ থেকে পাই। নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত কর, যেন তুমি তাকে দেখছ, অথবা যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে তিনি তো তোমাকে অবশ্যই দেখছেন’। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫০)।

তেমনিভাবে নামাজে পাঠ করা আয়াতের অর্থের প্রতি খেয়াল করা, নামাজের রুকনগুলো যথাযথ আদায় করা, জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করা নামাজে একাগ্রতা ও মনোযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে থাকে। যদি খুশু খুযু ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তাহলে এতে যেমন আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভ হবে, তেমনি তা আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভেরও কারণ হবে। এর মাধ্যমে আমরা ইহকালীন এবং পরকালীন সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম