দরুদ পাঠ হোক নিত্যদিনের ইবাদত
মুহাম্মদ আবু সালেহ
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দরুদ পাঠ বস্তুত রাসূলের প্রতি ভালোবাসার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ। মুমিনের প্রতিদিনের পঠিত আমলগুলোর মধ্যে দরুদ পাঠ আল্লাহর কাছে একটি পছন্দনীয় আমল। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই কেয়ামতের দিন ওই ব্যক্তিই আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে, যে আমার ওপর সর্বাধিক দরুদ পাঠ করবে। (মুসলিম, হাদিস, ৩৮৪)।
রাসূলের প্রতি দরুদ স্বয়ং আল্লাহতায়ালা ও তার ফেরেশতাদের নিয়ে পাঠ করেন এবং তার বান্দাদের পাঠ করার আদেশ করেন।
কুরআনুল কারিমে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবিজির ওপর দরুদ পাঠ করেন। হে মুমিনরা, তোমরাও নবির ওপর দরুদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। (সূরা আহজাব, আয়াত-৫৬)।
ফজিলতপূর্ণ এ আমলটি অন্য আমলের মতো নির্দিষ্ট কোনো সময় বা জায়গার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বরং যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গায় তা আদায় করা যায়। তবে হাদিস থেকে বিশেষ কিছু সময় দরুদ পাঠের নির্দেশনা পাওয়া যায়।
দ্বীনি মজলিসে দরুদ পাঠ করা
যে কোনো ইসলামি মজলিসে রাসূল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ জরুরি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) বলেছেন, ‘যেসব লোক কোনো মজলিসে বসেছে অথচ তারা আল্লাহর জিকির করেনি এবং তাদের নবির প্রতি দরুদও পাঠ করেনি, তারা বিপদগ্রস্ত ও আশাহত হবে। আল্লাহতায়ালা চাইলে তাদের শাস্তিও দিতে পারেন কিংবা মাফও করতে পারেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮০)।
জুমার দিন দরুদ পাঠ
আনাস বিন মালেক (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা জুমার দিন ও জুমার রাতে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ কর। কারণ যে আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করেন।’ ( আবু দাউদ, হাদিস : ১২০৯)।
আজানের পর দরুদ পাঠ করা
বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবি করিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শোন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বলো। অতঃপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করো। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫)।
মোনাজাতের আগে দরুদ পাঠ করা
ফাজালাহ ইবনে উবাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, এক লোককে নবি (সা.) তার নামাজের মাঝে দোয়া করতে শুনলেন, কিন্তু নবি (সা.)-এর ওপর সে দরুদ পড়েনি। রাসূল (সা.) বলেন, এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অন্য কাউকে বলেন, তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে সে যেন আল্লাহতায়ালার প্রশংসা ও তার গুণগান করে, তারপর রাসূল (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দোয়া করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৭)।
মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময়
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে, তখন সে যেন রাসূল (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭১৩)। রাসূল (সা.)-এর নাম উচ্চারণ করলে ও শুনলে দরুদ পাঠ করা সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেন, ‘সে-ই হচ্ছে কৃপণ, যার সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে অথচ সে আমার ওপর দরুদ পড়েনি।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪৬)।