মুমিনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ উত্তম চরিত্র
কাওসার আহমদ যাকারিয়া
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন-‘চারিত্রিক সৌন্দর্য ও গুণাবলির পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের জন্যই আমি প্রেরিত হয়েছি।’ ২৩ বছরের নবি জীবনে গোটা বিশ্বের কাছে তিনি উত্তম চরিত্রগুলোর এক নমুনা তুলে ধরেছেন। জীবনের সব ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়িত হলে দুনিয়া জান্নাতে রূপান্তরিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-রাসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই উত্তম যে চরিত্রের দিক থেকে উত্তম।’ একবার আব্দুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি প্রধানকে সম্বোধন করে বলেছিলেন-‘নিঃসন্দেহে তোমার মধ্যে এমন দুটি প্রশংসনীয় সৌন্দর্য বিদ্যমান যা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। একটি হলো ব্যক্তিত্ব, আর দ্বিতীয়টি হলো শিষ্টাচার।’
আমরা যদি সুন্দর জীবনযাপন করতে চাই, তাহলে আমাদের উচিত চরিত্র ঠিক রাখার সাধনা করা। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তাই মানুষের চরিত্র মানুষের মতোই হওয়া উচিত। চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান। চরিত্র গঠনের গুরুত্ব এতই ব্যাপক যে জীবনের যাবতীয় সফলতার পূর্বশর্ত হিসাবেই একে বিবেচনা করা যায়। ব্যক্তিগত জীবনে সুখী, সফল আত্মপ্রত্যয়ী এবং জয়ী হওয়ার জন্য চরিত্রের প্রয়োজন। সামাজিক জীবনে প্রভাবশালী ও বরণীয় হওয়ার জন্য চরিত্রের প্রয়োজন। চরিত্রের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক জীবনে শান্তিপূর্ণ বাসস্থান এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য।
সুন্দর চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ। চরিত্রকে পবিত্র রাখা একজন মানুষের অবশ্য কর্তব্য। চরিত্রহীন ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও দেশের কলঙ্ক। যে সমাজে চারিত্রিক অধঃপতন শুরু হয় সেখানে বিভিন্ন বালামুসিবত আসতে শুরু করে। পৃথিবীর ইতিহাসে আল্লাহতায়ালা বড় বড় যত শাস্তি মানুষকে দিয়েছেন, সেগুলোর কারণ ছিল চারিত্রিক অধঃপতন ও অশ্লীলতার সয়লাব।
কুরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা হজরত লুত (আ.)-এর সম্প্র্রদায়ের অশ্লীলতা, চারিত্রিক অধঃপতন ও তাদের ওপর নেমে আসা ভয়াবহ শাস্তির কথা আলোচনা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে ‘অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, তখন আমি ওই জনপদের উপরকে নিচে করে দিলাম এবং তার ওপর স্তরে স্তরে কাঁকর পাথর বর্ষণ করলাম।’ (সূরা হুদ : ৮২)।
চরিত্রের পবিত্রতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে ইসলাম অনেক গুরুত্ব আরোপ করেছে। যেসব কারণে মানুষের চারিত্রিক কলুষতা তৈরি হয়, সেগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও কেউ যদি অপকর্মে লিপ্ত হয় তাহলে তার কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে।
বর্তমান সমাজে চরিত্রের অধঃপতন খুবই উদ্বেগজনক। চতুর্দিকে চরিত্র ধ্বংসের রমরমা আয়োজন। নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরা। অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েরাও জড়িয়ে পড়ছে অশ্লীলতায়। ফলে সমাজে পরিবারে নেমে আসছে চারিত্রিক অধঃপতন। শিক্ষালয়ে কর্মস্থলে নারী হারাচ্ছে সম্ভ্রম। এর থেকে উত্তরণে আমাদের প্রত্যেককে নবিজির অনুপম চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করতে হবে।