Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

প্রেমের মদিনা

Icon

সুহাইল আহমদ

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রেমের মদিনা

দুনিয়ার সব মুমিন-মুসলমানের হৃদয়ের আবেগ ও উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রস্থল হলো নবির শহর মদিনা। আল্লাহতায়ালা কুরআনুল কারিমে এ ভূমিকে অনেক নামে সম্বোধন করেছেন। মদিনা হলো ‘আরদুল্লাহ’ বা আল্লাহর ভূমি; ‘আরদুল হিজর’ বা হিজরতের ভূমি। দুনিয়ার বুকে মদিনা মুনাওয়ারার মতো এত অধিক নাম বিশিষ্ট জনপদ আর দ্বিতীয়টি নেই। যদিও মদিনার জিয়ারত হজের রোকন নয়; তথাপিও যারা মদিনাওয়ালার আশেক, তারা মদিনার জিয়ারতে থাকে আত্মহারা পাগলপারা। যুগে যুগে যার প্রমাণ দিয়েছেন প্রিয়নবি (সা.)-এর আশেক বান্দারা।

হজরত ইমাম মালিক (রহ.) মদিনাকে দুনিয়ার সব শহরের সেরা ও সর্বোত্তম শহর বলতেন। শুধু তাই নয়, তিনি মদিনায় মৃত্যু কামনায় সমগ্র জীবনে একবার মাত্র হজ সম্পাদন করেন।

এ পবিত্র ভূমি প্রিয় নবি (সা.)-এর পবিত্র চরণ স্পর্শে ধন্য হয়েছে। এ শহরের প্রতিটি অলিগলি; এ ভূমির আকাশ-বাতাসে মিশে আছে প্রিয় নবির শ্বাস-প্রশ্বাসের সুবাস।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন; ‘মদিনার প্রবেশ পথগুলোয় ফেরেশতারা পাহারায় নিয়োজিত রয়েছে। এখানে প্লেগ ও দাজ্জাল প্রবেশ করবে না’ (মুসলিম)। ‘মদিনা হলো হাঁপরের মতো, যা তার আবর্জনাকে দূর করে দেয় এবং ভালোটা স্পষ্ট হয়’ (মুসলিম)।

রাসূল (সা.) ‘বলেছেন, নিশ্চয় ইবরাহিম (আ.) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করে তার অধিবাসীদের জন্য দোয়া করেছেন। ইবরাহিম (আ.) যেভাবে মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন, আমিও সেভাবে মদিনাকে হারাম ঘোষণা করছি। আর ইবরাহিম মক্কাবাসীর জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, সেভাবে আমিও এখানকার মুদ ও সা’-এর মধ্যে দ্বিগুণ বরকতের দোয়া করছি’ (মুসলিম)।

আরও বলেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি মক্কায় যে বরকত দিয়েছেন মদিনায় তার চেয়ে দ্বিগুণ বরকত দিন’ (বুখারি)। আনাস (রা.) বলেন; ‘নবি (সা.) সফর শেষে ফিরার পথে যখন মদিনার প্রাচীরগুলোর দিকে তাকাতেন, তখন তিনি এর ভালোবাসায় তার বাহন উষ্ট্রীকে দ্রুত হাঁকাতেন। যদি অন্য কোনো জন্তুর ওপর থাকতেন তাকেও দ্রুত হাঁকাতেন (বুখারি)।

তাবুক থেকে ফেরার পথে মদিনা দৃষ্টিগোচর হলে বলতেন, ‘এটা হচ্ছে তাবাহ্, আর এটা হচ্ছে উহুদ। উহুদ হচ্ছে এমন পাহাড় যে আমাদের ভালোবাসে, আমরাও তাকে ভালোবাসি’ (মুসলিম)। বলতেন, ‘যার পক্ষে সম্ভব সে যেন মদিনায় মৃত্যুবরণ করে। কেননা এখানে মৃত্যুবরণকারীদের জন্য আমি সুপারিশ করব’ (তিরমিজি)।

রাসূল (সা.) নিজে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমার ইন্তেকাল যেন পবিত্র মদিনায় হয়’ তাঁর এ ভালোবাসা তাঁর ওফাতের পরও যে রয়ে গেছে তা এক হাদিস থেকে বোঝা যায়। তিনি বলেছেন, ‘কিয়ামতের ময়দানে সর্বপ্রথম আমার শাফায়াত লাভ করবে মদিনাবাসী।’

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; ‘রাসূলে কারিম (সা.) এরশাদ করেছেন-কেয়ামতের সময় পৃথিবীর ধ্বংসক্রিয়া চলাকালে মদিনা মোনাওয়ারা সবচেয়ে পরে ধ্বংস হবে’ (তিরমিজি)। মদিনায় রয়েছে সেই মহান সত্তা যার ওসিলায় সমদুয় রহমত প্রদান ও বণ্টন করা হয় এবং ইবাদত কবুল হয়। মদিনায় এসে রওজাপাকে সালাম দিলে উত্তর পাওয়া যায় এবং রওজার পাশে দোয়া কবুল হয়। মদিনার সঙ্গে রয়েছে মুমিনের ইমান, প্রেম কলেমা ও মুক্তির সম্পর্ক।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম