ঐতিহ্যে ইসলাম
কওমি মাদ্রাসার সূতিকাগার দারুল উলুম দেওবন্দ
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ শহরে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বেসরকারি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল উলুম দেওবন্দ।
কওমি মাদ্রাসার সূতিকাগার হিসাবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি ১৮৬৬ সালের ৩০ মে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পর ভারতবর্ষের মানুষের মাঝে ইসলাম ও দেশপ্রেমের চেতনা বিস্তারের লক্ষ্যে মওলানা কাসিম নানুতাবির (১৮৩২-৮০ খ্রি.) নেতৃত্বে দেওবন্দের সাত্তা মসজিদে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়।
এর প্রথম শিক্ষক ছিলেন মুল্লা মাহমুদ দেওবন্দী এবং প্রথম ছাত্র ছিলেন মাহমুদ হাসান-যিনি পরবর্তীকালে শায়খুল হিন্দ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনার ক্ষেত্রে যে আটটি মূলনীতি গ্রহণ করা হয়, তার উদ্দেশ্য ছিল মাদ্রাসাটিকে সরকার ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিদের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা।
নিয়ম অনুযায়ী আট বছর মেয়াদি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপনের পর এতে দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত আরও আট বছর আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ব্যাকরণ, অলংকারশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, দর্শন, ফিকাহ, উসুল-ই-ফিকাহ, হাদিস, উসুল-ই-তাফসির, ফারাইজ, আকাইদ, কালাম, মুনাজারা, কিরাআত, তাজবিদ এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষা দেওয়া হয়।
দাওরা-ই-হাদিসের পর এক বছর মেয়াদি তাকমিল-ই-তাফসির, তাকমিল-ই-মাকুলাত, তাকমিল-ই-দ্বীনিয়াত ও দাওয়া প্রশিক্ষণ এবং দুবছরের তাকমিল-ই-সাদার ও চার বছরের জন্য ইউনানি চিকিৎসা বিজ্ঞানে পাঠ্যক্রম নির্দিষ্ট আছে।
এক সময় এর সর্বস্তরে শিক্ষার মাধ্যম উর্দু থাকলেও সময়ের ব্যবধানে আরবি ও ইংরেজিসহ আধুনিক নানা জ্ঞান বিজ্ঞানও এতে যুক্ত হচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সীমানা পেরিয়ে ক্রমেই ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার নানা দেশে দেওবন্দের অনুসারী বহু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
যেগুলোকে কওমি মাদ্রাসা হিসাবে সবাই চিনে থাকেন। উল্লেখ্য, অনেকের কাছে দারুল উলুম দেওবন্দই ‘এশিয়ার আল-আজহার’ নামে পরিচিত।