Logo
Logo
×

বিচ্ছু

মলাট বৃত্তান্ত

মশা যখন মেয়রের খোঁজে

এত মনোযোগ দিয়ে আমরা কী খুঁজছি? * উই আর লুকিং ফর মেয়রস...

Icon

মো: রায়হান কবির

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পট পরিবর্তন হলে কত কিছু যে দেখতে হয় তার হিসাব নাই। সাম্প্রতিক পট পরিবর্তনে এমন অনেক কিছুই দেখতে হচ্ছে যা আগে দেখা হয়নি আমাদের। এ দেশের জনপ্রিয় একটা কথা আছে, ‘কী সুন্দর বর্ষাকাল, বাঘে চাটে ছাগলের গাল!’ কথাটি হয়তো ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ভিন্নভাবে প্রচলিত। সারমর্ম কিন্তু একই। কোটি কোটি টাকা খরচ করে এক সময় মশা খোঁজা হতো। কামান দাগান না হলেও কামানের চেয়ে কম ছিল না সেই ফগার মেশিন। কিন্তু তারপরও মশা তার জায়গা থেকে বিন্দুমাত্র নড়েনি। বরং দ্বিগুণ উৎসাহে কামড়ে গেছে। একদিকে সিটি করপোরেশনগুলো মশা মারতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিত, আর অন্যদিকে মশারা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল বের করে টিকে থাকত। যেন মশা মারা নয়, চোর পুলিশ খেলা চলত। বিকালে মশা মারার ওষুধ ছিটিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যা নামলেই সেই ভ্যানভ্যান আওয়াজে চারদিকে মুখরিত (পড়ুন বিরক্ত) হয়ে উঠত। পরে জানা যেত, সেসব ওষুধ হয় মেয়াদউত্তীর্ণ ছিল না হয় ভেজাল ছিল। ফলে বহাল তবিয়তেই থেকে যেত মশা। এখনো ডেঙ্গু মশারা তাদের উপদ্রব এতটাই বাড়িয়েছে যে, ডেঙ্গু মৌসুম না থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেক বেশি। বিগত ১৫ বছর যারা শাসন করেছিলেন তাদের অনেকেই এখন দৃশ্যপটে নেই। ফলে বিগত শাসনামলে যারা লালিত-পালিত হয়েছে, বিশেষ করে যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে যারা এতটা সংঘটিত হয়েছে তাদেরও তো গা-ঢাকা দেওয়া উচিত, মানে মশা প্লাস ডেঙ্গু মশাদের কথাই বলছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিগত সরকারের ছায়াটিও যেখানে নেই, সেখানে সে আমলের মশাদেরও উচিত ছিল তাদের দোসরদের পিছু নেওয়া। কিন্তু তারা এ আমলেও ঠিকই টিকে আছে। হাজার হাজার মামলা-হামলাও তাদের টিকিটি ছুঁতে পারেনি। আজকাল তো অনুসারি বা ফলোয়ারের যুগ। কেউ ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে অমুক-তমুককে ফলো করে তো কেউ তাদের প্রিয় নেতা বা নায়ক-নায়িকাদের সরাসরি ফলো করে। সে হিসাবে বিগত শাসনামলের নেতাকর্মীরা চেইন অব কমান্ড মেনে যার যার ওপরের জনকে ফলো করে দৃশ্যপটের আড়ালে আছেন। সমস্যা হলো, মশারা তাদের গুরু মানে মেয়রদের! সম্ভবত তাদের ফলো করত বা তাদের অনুসারী ছিল। কিন্তু মেয়রদ্বয় কাউকে কিছু না বলেই আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় মশককূল তাদের সঙ্গে বনবাসে কিংবা আত্মগোপনে যেতে পারেনি। তাই বিগত আমলের অনেক কিছুই এখন দৃশ্যমান না থাকলেও মশারা আছে স্বমহিমায়। সুতরাং একবাক্যে বলা যায়, দেশে যত পতনের ঘটনাই ঘটুক না কেন মশাদের পতন নাই! এখন দেশবাসী তথা ঢাকাবাসীকে মশা থেকে পরিত্রাণ দিতে মশাদের বিরুদ্ধে নতুন অভ্যুত্থান দরকার। আরও জোরালো কোনো স্লোগান তৈরি করে, আরও ক্ষুরধার ‘মাস্টারমাইন্ড’ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, তবেই মশাদের পতন সম্ভব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম