টঙ্গীতে রাজউকের শিল্প প্লট
মসজিদ নির্মাণের নামে জমি দখলের কৌশল
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী চেরাগআলী মার্কেট এলাকায় রাজউকের শিল্প জোনে মসজিদ নির্মাণের নামে জমি দখলের অভিনব কৌশল চালাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল। কয়েক দফা উচ্ছেদের পর এবার অভিনব কায়দায় তার পাকা মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগুয়া তিব্বত শিল্প গোষ্ঠীর প্লটের সামনে চলছে এ দখল কার্যক্রম। স্থানীয়রা জানান, ষাটের দশকের শুরুতে তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট বর্তমানে ডিআইটির (রাজউক) আওতাধীন টঙ্গী শিল্পাঞ্চলের (শিল্প জোনের) জন্য টঙ্গীর আউচপাড়া মেীজার সৈলারগাতী ও হিমারদিঘী সাকিনাস্থ আরএস খতিয়ান- ১৬, ০৩ ও ১১ আর.এস-১১২৮, ৩৩, ও ০১ নং দাগে পুরান প্লট নং ৮৬, নতুন প্লট নং ৪০ যার জমির পরিমাণ ৭ বিঘা ১৭ কাঠা আধা ছটাকসহ আশপাশের জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া আলোচিত ওই শিল্প প্লটের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগেরও জমি রয়েছে। কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের প্যানেল আইনজীবী আরিফুজ্জানান জানান, সরকারি দুটি সংস্থার নামে জমি অধিগ্রহণের পর ওই এলাকায় ব্যক্তি মালিকানা কোন জমি অবশিষ্ট নেই। এছাড়া ওই শিল্প জোনে প্রত্যেকটি প্লটের চারপাশে সুপরিসর জায়গা খালি রেখে প্লটগুলো বিন্যস্ত করা হয়েছে। এলাকার ভারী শিল্প কারখানাগুলোর পরিবহণ পার্কিং করার সুবিধার্থেই প্লটগুলোর সামনে পর্যাপ্ত জায়গা খালি রাখা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মহল ওই জায়গাগুলো অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন অস্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে।
স্থানীয় হারুন অর রশিদ জানান, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একসময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু যখনই যে দল ক্ষমতায় যেত পরে ওই দলের লোকজন এসব খালি জায়গা পুনরায় দখল করে নিত। বর্তমানে একই দল একটানা ক্ষমতায় থাকার সুবাধে কিছু সুবিধাবাদী লোক সরকারি দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে এসব জায়গা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের দখলে রেখেছে। রাজউকের সি ব্লকের ৮৬ (নতুন ৪০) নং প্লটের সামনে সংসর উদ্দিন মার্কেট ইতোপূর্বে কয়েক বার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সর্বশেষ সেখানে মসজিদ করার নামে জায়গাটি অভিনব কায়দায় দখল করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা মূল্যের ওই সম্পত্তির কিছু অংশে প্রথমে মসজিদের নামে টিনের ছাপড়া দিয়ে পাশের বাকি সব খালি জায়গায় একই নামে (সংসর উদ্দিন) মার্কেট বানিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছে একটি মহল। এছাড়া দোকান বরাদ্দ বাবদ মোটা অংকের অগ্রিম টাকাও নেওয়া হয়েছে। মার্কেটটির পুনরায় উচ্ছেদ ঠেকাতে সম্প্রতি ছাপড়া মসজিদটি ভেঙে পাকা করা হচ্ছে। মজসিদ কমিটির সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ওই মার্কেটে একাধিক দোকান ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার দাদা শ্বশুর সংসর উদ্দিন এসএ ও সিএস পর্চামূলে এই জমির মালিক ছিলেন। পরে আরএস জরিপে সড়ক ও জনপথ এবং ডিআইটির (রাজউক) নামে ভুলবশত এসব জমি রেকর্ড হয়। তবে ওই দাগ থেকে ডিআইটি ও সওজ কতটুকু জমি হুকুম দখল করেছে এবং এরপর আরও কোনো জমি অবশিষ্ট আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, অধিগ্রহণের ফাইল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এ ব্যাপারে কোনো তথ্য তিনি সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে তারা রেকর্ড সংশোধনের জন্য আদালতে দেওয়ানী মোকাদ্দমা দায়ের করেছেন বলে জানান।