
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
মার্চ ফর গাজা : লাখো মানুষের মহাসমুদ্র
জাগো বিশ্ব জাগো মানবতা
বুকে আগুন মুখে প্রতিবাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেন একখণ্ড ফিলিস্তিন * মিছিল স্লোগানে প্রকম্পিত ঢাকার রাজপথ * গণহত্যার প্রতিবাদে সরব বাংলাদেশ * মোনাজাতে লাখো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো প্রার্থনা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
যেদিকে চোখ যায়, কেবল মানুষ আর মানুষ। হাতে হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, বুকে প্রতিশোধের আগুন, মুখে স্লোগান নিয়ে দৃপ্তপদভারে এগিয়ে চলেছে জনস্রোত। স্বজন হারানোর ব্যথা লালন করে ক্ষোভে টগবগ করে ফুটছে মিছিলে অংশ নেওয়া যুবক, বৃদ্ধ, নারী, শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ। তারই প্রতিবাদে দল-মত, চিন্তা-দর্শন, সব মত ও পথের মিছিল মিশে গেছে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। শনিবার ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন। গত পাঁচ আগস্টের পর জনতার এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, বিশাল জমায়েত দেখা যায়নি দেশে। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’র উদ্যোগে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল মহাসমুদ্রে রূপ নেয়। গণহত্যার প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। এদিন ছিল না দল-মতের বিভেদ, রেষারেষি ভুলে পাশাপাশি হেঁটেছেন সবাই। কর্মসূচি ঘিরে ঐক্যের এক নতুন সেতুবন্ধ তৈরি হয়। অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুষ্টিবদ্ধ প্রতিটি হাত মজলুম ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে। উত্তরা থেকে যাত্রাবাড়ী, শাহজাহানপুর থেকে মোহাম্মদপুর-প্রতিবাদ মিছিলে মিছিলে শহর ঢাকা যেন একখণ্ড ফিলিস্তিনের রূপ নেয়। প্রতিবাদ জানাতে আসা সবার গন্তব্য ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আসার সময় তাদের অনেকে পথে পথে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকায় আগুন দেন। কোথাও কোথাও তার প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকটি মিছিলের সামনে সাদা কাপড়ে মোড়ানো প্রতীকী রক্তাক্ত শিশুর লাশ বহন করেন বিক্ষুব্ধরা। জনস্রোতে মুহুর্মুহু স্লোগান উঠে ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ, খুনিদের বিচার ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবি।
উদ্যানের সমাবেশে ছিল না আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্যের ফুলঝুরি, সবার কণ্ঠে শুধু ছিল প্রতিবাদী স্লোগান। ফিলিস্তিন একদিন মুক্ত হবে, ধ্বংস হবে সাম্রাজ্যবাদীরা। স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন; স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন। ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন। জাগো বিশ্ব; জাগো মানবতা-এমন হাজারো স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে ঢাকার রাজপথ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি জানান দেয় গাজায় ভুলণ্ঠিত মানবতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কঠোর অবস্থান। সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কয়েকজন। গাজাবাসীর শান্তি কামনায় সমাবেশে মোনাজাত করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক মোনাজাত করেন। এতে নিজে কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন অন্যদের। এই কর্মসূচিতে অংশ নেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, গণ-অধিকার পরিষদ, লেবার পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপাসহ সব রাজনৈতিক দল, জাতীয় দলের ক্রিকেটার, অভিনেতা, তাবলিগ জামাত, আহলে হাদিস, হাইয়াতুল উলইয়া, বেফাকুল মাদারিস, দারুন্নাজাত মাদরাসা, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলনসহ রাজনৈতিক- অরাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচি থেকে একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এর আগে বেশ কয়েকজন ইসলামিক স্কলার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে এক হৃদয়গ্রাহী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।
প্রসঙ্গত, ইসলামের পুণ্যভূমি ফিলিস্তিনকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা ও মসজিদে আকসাকে সমূলে ধ্বংস করাই ইহুদিদের প্রধান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথেই হাঁটছে দখলদার ইহুদিরা। আল-আকসা মসজিদ ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এটি মুসলমানদের প্রথম কিবলা এবং মক্কা ও মদিনার পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। কুরআন ও হাদিসে এই মসজিদের বিশেষ মর্যাদা ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। মজলুম মুসলিমদের হাহাকারে প্রকম্পিত হচ্ছে ফিলিস্তিন ও আল-কুদসের আকাশ-বাতাস। এর প্রতিবাদে শনিবার রাজধানী ঢাকায় মার্চ ফর গাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুকে আগুন মুখে প্রতিবাদ : এ দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নারী-শিশু-বৃদ্ধ সবাই হাতে হাত ধরে এক কাতারে এসে দাঁড়ায়। এদের কারও হাতে ফিলিস্তিনের ফ্যাস্টুন, মাথায় ফিলিস্তিনের পতাকা, কপালে ফিলিস্তিনি ব্যাজ। মুখে স্লোগান- ‘স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন’, ‘স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন’, ‘তুমি কে আমি কে’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘গাজা শান্তি চায়’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘ফিলিস্তিনের শিশুদের রক্ষা করো’, ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’, ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’ ইত্যাদি পুরো এলাকা প্রকম্পিত করে। কারও গায়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা টি-শার্ট, অধিকাংশের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়। বেলা সোয়া তিনটায় মঞ্চে আসেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক, আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, মিজানুর রহমান আজহারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
বেলা সোয়া ৩টায় বিখ্যাত কারি আহমদ বিন ইউসুফের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া ফিলিস্তিনি জনপদ গাজার ওপর নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা মজলুম ফিলিস্তিনি ও গাজার পাশে সহাবস্থান ঘোষণা করছি। এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা ও মতপার্থক্য থাকতে পারে-কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা তাদের অধিকার। গাজার মানুষদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি।’
ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী তার বক্তব্যের শুরুতে ফিলিস্তিনের জনগণকে রক্ষায় শপথ উচ্চারণ করে বলেন, জনতার এই মহাসমুদ্রে উপস্থিত হয়ে আমরা বুঝতে পেরেছি, আজকের এই জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল-আকসার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের একেকজনের হৃদয়ে, বুকের ভেতরে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, গাজা, আল-কুদস। গাজায় মুসলিম ভাইয়েরা কেন শহিদ হচ্ছে, এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে জবাব চান তিনি।
মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের নুরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের ড. আহমদ আব্দুল কাদের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ-অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, রাশেদ খান ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিশচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনসহ জাতীয় দলের খেলোয়াড়, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
পাখির চোখে মার্চ ফর গাজা : ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দুপুর ১২টার পর থেকেই রাস্তায় নামে জনতার স্রোত। সবার গন্তব্য ছিল কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। কিশোর, তরুণ, নারী বাদ যাননি কেউ। বাবার হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসে শিশুরাও। এভাবে খণ্ড খণ্ড মিছিল গিয়ে মিলিত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল কেন্দ্রে। ফলে দুপুরের আগেই কানায় কানায় ভরে ওঠে উদ্যানের খোলা প্রান্তর।
দুপুর ২টার দিকে জনতার স্রোত উদ্যান ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, প্রেস ক্লাব, দোয়েল চত্বর এবং রমনা পার্ক এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বাস, মিনি ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে চড়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন এসব জনতা। অনেকে ট্রেনের ছাদে আবার কেউ আসেন হেঁটে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রতিবাদী জনতার হাতে ছিল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা। অনেকের মাথায় আরবি হরফে কালেমা খচিত ব্যান্ড দেখা যায়। এ সময় মিছিল থেকে ‘গাজা শান্তি চায়’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘ফিলিস্তিনের শিশুদের রক্ষা করো’, ‘দুনিয়ার মুসলিম এক হও লড়াই করো’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘আমেরিকার দালালরা হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
টিটিপাড়া থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে মিছিলে অংশ নেন নাজমুল হক। তিনি বলেন, গাজায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে তা দেখে আমার স্বাভাবিক জীবন থমকে গেছে। বুঝতে পারি না বিশ্বমানবতা আজ কোথায়? তিনি বলেন, আমরা নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার স্লোগান ইমানি জায়গা থেকে দিচ্ছি।
বাড্ডা থেকে আসা জুনায়েদ হাকিম বলেন, আমার পুরো শরীর ফিলিস্তিনের পতাকা দিয়ে ঢেকে রেখেছি। এর মানে কি বোঝেন না, যদি পারতাম তাহলে ফিলিস্তিনে গিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তাম। এসব হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। মিরপুর থেকে আসা হাফেজ মোহাম্মদ তায়েব বলেন, ফিলিস্তিনে যে গণহত্যা চলছে, তার বিরুদ্ধে আমরা মুসলমান হিসাবে চুপ থাকতে পারি না। তাই সংহতি জানাতে এসেছি। সাভার থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি দল করি না, ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িতও নই। কিন্তু একজন মানুষ হিসাবে ফিলিস্তিনের শিশুদের কান্না আমাকে নাড়া দিয়েছে। তাই এখানে এসেছি। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিয়াম ইসলাম বলেন, ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমাজকে জাগাতে হবে। বাংলাদেশ থেকেও সেই আওয়াজ তুলতে হবে। ইমানি দায়িত্ব হিসাবে কর্মসূচিতে এসেছি।
মোনাজাতে খতিব কাঁদলেন অন্যদের কাঁদালেন : বিকাল সোয়া ৪টার দিকে গাজাবাসীর জন্য শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করা হয়। বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক মোনাজাত পরিচালনা করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোনাজাতে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলরা যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা মানবতার ওপর চরম আঘাত। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করেন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতার আলো দেখান। এ সময় মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষও কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা ইসরাইলি বর্বরতার হাত থেকে সৃষ্টিকর্তার কাছে নির্যাতিত গাজাবাসীর মুক্তি চান।
মোনাজাত শেষে নুরে আলম নামের এক শিক্ষার্থী যুগান্তরকে বলেন, ইসরাইলের বর্বরতার কাছে বিশ্বের সব নির্যাতনের রেকর্ড হার মেনেছে। এমনকি দুধের শিশুরা তাদের গুলি থেকে রেহাই পায়নি। আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে যুদ্ধক্ষেত্রে হাসপাতালে এমনকি রেডক্রসের কর্মীদের গুলি করা হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতেও বিশ্ব বিবেক নির্বিকার। যুক্তরাষ্ট্র তাদের উলঙ্গ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
আমীরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, অবিলম্বে ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এছাড়া স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে ন্যায্য দাবি তার প্রতি সমর্থন দিতে হবে জাতিসংঘকে। এছাড়া ইসরাইল ছাড়া অন্য যেসব দেশ এ গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছে তাদেরও আন্তর্জাতিক মহলে বয়কট করতে হবে। সমাবেশ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সড়কের বিভিন্ন মোড়ে সতর্ক পাহারায় ছিলেন সশস্ত্র সেনা সদস্যরা। এছাড়া পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপন করা হয় ১০টি মেডিকেল ক্যাম্প। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াদের মাঝে পানি, খেজুরসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।