
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসাবে ঘোষণা করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা আদালত ২০২০ সালের ডিএসসিসি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসাবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইশরাক হোসেন। ইশরাক অবিভক্ত ঢাকার প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে।
রায়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়র হিসাবে সরকারি গেজেট বাতিল করা হয়। এর আগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।
আদালতের এই রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, সেই নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ভোট জালিয়াতি হয়েছিল। এই রায়ে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে মেয়র হিসাবে শপথ নেব কিনা তা দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে মামলা করেছিলাম, লড়েছি। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় আইনি জটিলতা তৈরি করে রাখা হয়েছিল। হাসিনার ভাতিজা তাপস নিজে আদালতে হস্তক্ষেপ করে মামলার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রেখেছিলেন। ৫ আগস্টের পর আদালতে সব তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণাদি দিয়ে এবং মামলা লড়ে জিতেছি।
ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। তাকে মেয়র হিসাবে ঘোষণার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন। ইসরাক হোসেনকে মেয়র হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরে ও ফজলে নূর তাপস দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর তারা শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে সাবেক মেয়র আতিককে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় এবং রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। অন্যদিকে সাবেক মেয়র তাপসের কোনো হদিস নেই। বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে, তিনি শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগেই দেশ ছেড়েছেন।
নির্বাচনি আইন অনুযায়ী ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী বা তার মনোনীত ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয়।
রায়ের পর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। রায় ও আইন বিধি অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। রায়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার পর বিলম্ব করার কোনো অবকাশ নেই। সিদ্ধান্ত যেটাই হোক না কেন সেটা আমরা দ্রুতগতিতে নিয়ে থাকি।