Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

প্রয়োজন জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা

তিন ধাপে সংস্কারে মত বিশ্লেষকদের

সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। যখন যে সরকার আসবে, তারাই করবে, এটাই নিয়ম -আবু আলম শহীদ খান * যতটা সম্ভব বর্তমান সরকার করবে, বাকিগুলো রাজনৈতিক সরকার-মাসুদ কামাল

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তিন ধাপে সংস্কারে মত বিশ্লেষকদের

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এবং নজিরবিহীন এই আত্মদানের সুফল ঘরে তুলতে রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কারের বিকল্প নেই। তবে এ সংস্কার হতে হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। বিশেষ করে ভোটের মাঠে যে রাজনৈতিক দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। শুধু তাই নয়, বর্তমান বাস্তবতায় একসঙ্গে সব ক্ষেত্রে সংস্কার সম্ভব নয়; তাই স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কারে হাত দিতে হবে-এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তাদের অভিমত-ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। নতুন করে যাতে রাষ্ট্র, কিংবা সমাজে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, এজন্য সংস্কার অপরিহার্য। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করণীয় ঠিক করে প্রয়োজনীয় সংস্কারে হাত দিতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু করতে হবে। রোববার যুগান্তরকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন সাবেক সিনিয়র সচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খান এবং সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল।

আবু আলম শহীদ খান যুগান্তরকে বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা যতদিন থাকবে, সংস্কার ততদিন চলতে থাকবে। কোনো একটি নির্দিষ্ট শাসকদলের পক্ষে সব সংস্কার করা সম্ভব না। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারাও প্রয়োজনমতো সংস্কার করবে, এটাই নিয়ম। আমাদের এখানেও সংস্কারের কথা উঠছে। আমি মনে করি, স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘ-এ তিনভাগে ভাগ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য খুবই জরুরি। একই সঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তাদের মতামতকেও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার যে মূল লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য পূরণেও এগিয়ে যেতে হবে।

মাসুদ কামাল বলেন, সংস্কারের বিষয়ে ছয়টা কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাদের দক্ষতা-যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আমি মনে করি, তারা অনেক ভালো কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের প্রতিবেদনে। এখন প্রয়োজন এ প্রতিবেদন থেকে কোনটা গ্রহণ করা হবে, কোনটা গ্রহণ করা হবে না, তা ঠিক করতে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসে ঐকমত্যে পৌঁছানো। প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে একদফা বৈঠক করেছেন। হয়তো তিনি আরও বৈঠক করবেন। তবে একসঙ্গে যেহেতু সব সংস্কার করা যাবে না, তাই তিনভাগে ভাগ করে, অর্থাৎ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। যতটা সম্ভব বর্তমান সরকার করবে, বাকিগুলো রাজনৈতিক সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে সংস্কার সংস্কার বলে অহেতুক সময় নষ্ট না করে নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু করতে হবে।

প্রসঙ্গত, শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং কয়েকটি সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। এর আগে বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে এ কমিশনের সহসভাপতি করা হয়। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন-জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম