আয়নাঘরের কক্ষ চিহ্নিত করলেন নাহিদ ও আসিফ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে তুলে নিয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখা হতো। এসব বন্দিশালার প্রতীকী নাম রাখা হয়েছে ‘আয়নাঘর’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এমনই নির্যাতনকেন্দ্রে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এবার আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে বন্দি থাকা সেই কক্ষগুলো শনাক্ত করেছেন তারা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার ঢাকার তিনটি স্থানে এরকম তিনটি গোপন বন্দিশালা ঘুরে দেখেন। রাজধানীর আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় এ তিনটি স্থান পরিদর্শনের সময় কয়েকজন ভুক্তভোগী এবং সাংবাদিকরাও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসাবে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা মো. নাহিদ ইসলাম বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা। আর আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা। পরির্দশনকালে তারাও ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। আন্দোলনের সময় তাদের যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই দুই টর্চার সেল চিনতে পারার কথা জানিয়েছেন নাহিদ ও আসিফ। প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব শুচিস্মিতা তিথি পরে ফেসবুকে বেশকিছু ছবি শেয়ার করেন, যেখানে দুই উপদেষ্টা নাহিদ ও আসিফকে আয়নাঘরের দুটি কক্ষে দেখা যায়।
একটি পোস্টে শুচিস্মিতা তিথি লেখেন, গত জুলাইয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের এই ‘টর্চার সেলে’ রাখা হয়েছিল নাহিদ ইসলামকে। আজ (বুধবার) সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি ‘আইডেন্টিফাই’ করেন নাহিদ। এ কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসাবে একটি বেসিনের মতো ছিল বলে জানান তিনি। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেওয়াল রং করা হয়।
আরেকটি পোস্টে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একটি ছবি এবং বন্দিশালার দুটি ছবি দিয়ে তিথি লেখেন, গত জুলাইয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের এই ‘টর্চার সেলে’ রাখা হয়েছিল আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। আজ (বুধবার) সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি চিনতে পেরেছেন তিনি। দেওয়ালের ওপরের অংশের খোপগুলোয় ‘এক্সস্ট ফ্যান’ ছিল বলে জানান তিনি।
এদিকে আয়নাঘর পরিদর্শনের পর নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসাবে একটি বেসিনের মতো ছিল। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেওয়াল রং করা হয়।
আয়নাঘর পরিদর্শনের পর আসিফ মাহমুদ জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের দেওয়ালের ওপরের অংশের খোপগুলোয় এক্সস্ট ফ্যান ছিল, এখন নেই। আসিফ আরও জানান, তিনি দেওয়াল দেখে কক্ষটিকে চিনতে পেরেছেন। কক্ষটি আগে অনেক ছোট ছিল, এখন মাঝের দেওয়াল ভেঙে বড় করা হয়েছে। ওই কক্ষে তাকে চারদিন আটকে রাখা হয়েছিল। এ সময় বাইরের কারও সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। টয়লেট ছিল কক্ষের বাইরে এবং তাকে চোখ বেঁধে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হতো।