Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে উত্তাপ

কিছু বিষয়ে নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না: মির্জা ফখরুল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিছু বিষয়ে নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না: মির্জা ফখরুল

বেশকিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না-এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বুধবার আমাকে একজন সাংবাদিক এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন-অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে নির্বাচনের সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে কি না। আমি বলেছি, এর কারণ আছে। আমরা দেখছি বেশকিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না। আমি আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সেই নিরপেক্ষতা পালন করবে। যে সংকট আছে, তা থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তারা কাজ করবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে শহিদ আসাদ দিবসের এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ন্যূনতম বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ন্যূনতম বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। যারা একসঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন করছিলাম, আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। এখন যদি কোনো পরিবর্তন করতে হয়, পরিবর্ধন করতে হয়, সেটাও সামনে আসতে পারে। ওটাকে সামনে রেখেই আমাদের এগোতে হবে। নির্বাচনকেন্দ্রিক ন্যূনতম যে সংস্কার, তা শেষ করে অতিদ্রুত নির্বাচনের পথে যাওয়া উচিত। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার বেরিয়ে আসবে, তাদের দায়িত্ব হবে পুরোপুরিভাবে সেই সংস্কারের যে কমিটমেন্ট, তা বাস্তবায়িত করা, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা। আসাদ, আবু সাঈদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না। সেজন্য ঐক্য গড়ে তুলে তাদের (শহিদদের) স্বপ্নকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

শহিদ আসাদ পরিষদের উদ্যোগে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক শহিদ আসাদের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই সভা হয়।

দ্রুত নির্বাচন, নইলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে-এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা আমি বলি, যে কথা বললে পরে আমার সমালোচনাও হয়। আমি বলি, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার। এ কথাটা বারবার বলার চেষ্টা করি বা কেন বলি, কারণ আমরা বিশ্বাস করি ১৫ বছর ধরে বঞ্চিত জনগণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার একটা সুযোগ পাবে। জোর করে এ বিষয়টিকে যদি বিতর্কিত করে ফেলা হয়, তাহলে তো জনগণ আবার সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আমাদের যে অভিজ্ঞতা, তা থেকে দেখেছি, এ ধরনের নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, সময়ক্ষেপণ করা হয়, তাহলে অন্য শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। তখন জনগণের যে চাহিদা, তা থেকে তারা পুরোপুরিভাবেই বঞ্চিত হয়।

তিনি বলেন, আমরা এ কথাটা বারবার বলতে চাই, নির্বাচনে কে আসবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এর জন্য আমরা লড়াই করেছি দীর্ঘ ১৫ বছর। সেই কারণে বলেছি, সত্যিকার অর্থেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। স্বাভাবিকভাবে একটা ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের পরেই জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য-এখন পর্যন্ত সমাজের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সেই অবস্থায় কিন্তু আমরা সেই ধরনের একটা ব্যবস্থা দেখে এখনো নিশ্চিত হতে পারছি না যে দেশের মানুষের প্রত্যাশাগুলো পূরণ হবে।

নির্বাচনের জন্য কত অপেক্ষা প্রশ্ন রেখে বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন রকম কর্মসূচি আছে, সেই কর্মসূচি নিয়ে তারা এগোতে চায়। তবে একটা বিষয়ে সবাই একমত-একটা নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচনটা শুধু একটা দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, নির্বাচনটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য একটা পথ সৃষ্টি করা, একটা দরজা খোলা। আজ প্রশ্ন উঠছে-সংস্কার সবগুলো করে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্ন। তাহলে কি আমরা ৪/৫ বছর ধরে অপেক্ষা করব বা যতদিন সংস্কার সম্পন্ন না হয়, ততদিন অপেক্ষা করবে জনগণ। তারা তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখনো দেখছি, আমলাতন্ত্র আগের যে ব্যবস্থায় ছিল, সেই ব্যবস্থায় তারা এখনো সচিবালয় থেকে শুরু করে সব প্রশাসনে একইভাবে তাদের ভূমিকা পালন করছে। কোনো রদবদল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজগুলোয় সেই ধরনের লেখাপড়া হয় না, স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এটা অতীত থেকেই এসছে। সেই পরিবর্তন এত অল্প সময়ে সম্ভবও নয়। কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তনগুলো চাই। সেই কারণে বলেছি, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার। নির্বাচন দ্রুত হলে যে দল ক্ষমতায় আসবে, তার যে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট টু পিপলস থাকবে, সেই কমিটমেন্টগুলো পালন করার জন্য অবশ্যই তারা দায়বদ্ধ থাকবে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহিরউদ্দিন স্বপন, যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণসংহতি আন্দোনের জোনায়েদ সাকি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, অপর অংশের আসাদুর রহমান খান আসাদ, শহিদ আসাদের ছোট ভাই আজিজুল্লাহ এম নুরুজ্জামান নূর প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম