দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযান
এসকে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ টাকা উদ্ধার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া অভিযানকালে তার বাসায় প্রায় চার কোটি টাকার ব্যাংক ডিপোজিট ও এফডিআরের কাগজপত্র পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করার পর রোববার সংস্থাটির পরিচালক সাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল তার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানায়।
দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, সংস্থার এনফোর্সমেন্ট টিম এসকে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। অভিযানকালে যা পাওয়া গেছে তার জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সহায়তায় সংস্থাটির উপপরিচালক নাজমুল হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর পর এসকে সুরকে আদালতে হাজির করা হয়। আরও জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ফিলিপাইনের একটি পত্রিকায় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সে সময়ে তৎকালীন গভর্নরের পদত্যাগ ও দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন আরও দুজন ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। তারা হলেন আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ও এসকে সুর চৌধুরী।
অভিযোগ রয়েছে, রিজার্ভ কেলেঙ্কারি চাপা দিতে এসকে সুর চৌধুরীর বড় ভূমিকা ছিল। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে দুদকের হাতে, যা খতিয়ে দেখতে তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে দুদক। যে কারণে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশে ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কর্তারা দুদকের নজরদারিতে আছেন বলেও জানা যায়। এ ছাড়া আর্থিক খাতের বড় লোপাটকারী প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের তথ্য রয়েছে। পিকে হালদারের মাধ্যমে তিনি বিভিন্নভাবে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। আলোচিত পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৯ মার্চে এসকে সুরকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে সংস্থাটি। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লোপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এসকে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান।
দুদক জানায়, গত ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় এসকে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সম্পদের বিবরণী দাখিল না করায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪-এর ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত বছরের আগস্টে এই পরিবারের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।