Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

যুগান্তর সম্পাদক হলেন কবি আবদুল হাই শিকদার

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তর সম্পাদক হলেন কবি আবদুল হাই শিকদার

কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যুগান্তরে সম্পাদক হিসাবে যোগদান করেছেন। বুধবার যুগান্তর কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরে তিনি বলেন, সাধারণ জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী যুগান্তর আগের মতো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন অব্যাহত রাখবে। 

এর আগে নতুন সম্পাদককে যুগান্তর কার্যালয়ে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তর প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এবং যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম। এ সময় গ্রুপ পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম ও এসএম আব্দুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে কবি আবদুল হাই শিকদারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, ‘দৈনিক যুগান্তরে দক্ষ কর্মীবাহিনী রয়েছে। নির্ভীক সাংবাদিকতায় তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন সম্পাদক পেয়ে তাদের কাজের গতি এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে মনোযোগ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের মনের কথা, কষ্টের কথা যুগান্তরের প্রতিবেদনে প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।’ 

শামীম ইসলাম বলেন, ‘সত্য, বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। যুগান্তর হচ্ছে জনসাধারণের পত্রিকা। এ পত্রিকাকে তাদের আরও কাছে নিয়ে যেতে হবে। যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম যেভাবে চেয়েছিলেন, এত বছর সেভাবে যুগান্তর চলেছে। সামনের দিনেও তা ধরে রাখতে হবে। অনিয়মের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থাকতে হবে। সাদাকে সাদা বলতে হবে, কালোকে কালো বলতে হবে। এটাই প্রয়াত চেয়ারম্যানের কামনা ও বাসনা ছিল। সামনের দিনে তা ধরে রাখতে আরও বেশি কাজ করতে হবে।’ যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার তার বক্তব্যের শুরুতে যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে স্মরণ করে বলেন, ‘তিনি সেই মুক্তিযোদ্ধা, যিনি এই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে গেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমার অগ্রজ মুক্তিযোদ্ধার যে ভিশন, যে লক্ষ্য-তা পূরণ করা আমার কর্তব্য বলে মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি ও দলের চেয়ে দেশের স্বাধীনতা বড়। আমার দেশের স্বাধীনতা ও জনগণের চাহিদার কথা বলব। আমার জনগণের অভিপ্রায়, আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরব।’ 

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যমুনা টেলিভিশনের সিইও ফাহিম আহমেদ, দৈনিক যুগান্তরের উপসম্পাদক-আহমেদ দীপু, এহসানুল হক বাবু ও বিএম জাহাঙ্গীর, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, সব বিভাগীয় প্রধান এবং সিনিয়র সাংবাদিকরা। 

এর আগে সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবি আবদুল হাই শিকদার। মোনাজাতের মাধ্যমে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের উপসম্পাদক বিএম জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা। দোয়া ও মোনাজাত কর্মসূচি পরিচালনা করেছেন যুগান্তরের সাব-এডিটর তোফায়েল গাজ্জালি। আবদুল হাই শিকদার পত্রিকাটির সদ্যবিদায়ি সম্পাদক সাইফুল আলমের স্থলাভিষিক্ত হলেন। কবি আবদুল হাই শিকদার বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সংগঠক হিসাবে পরিচিত। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাচিত দুবারের সভাপতি। ৪৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত সাহিত্য মাসিক ‘এখন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আমার দেশ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দেশের সরকারি বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ফিচার বিভাগপ্রধান, দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক, টাইমস বাংলা ট্রাস্টের ম্যাগাজিন ‘বিচিত্রা’র সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক মিল্লাতের সহকারী সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক, সাপ্তাহিক সচিত্র স্বদেশের সহকারী সম্পাদক, সিনিয়র সহসম্পাদক এবং প্রতিবেদক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি প্রথিতযশা কলামিস্ট হিসাবেও পরিচিত। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে বিগত ১৫ বছর সাংবাদিকতার বাইরে থাকতে বাধ্য হন আবদুল হাই শিকদার।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি আবদুল হাই শিকদার দেশে-বিদেশে কবি, সাহিত্যিক ও নজরুল গবেষক হিসাবে পরিচিত। নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন তিনি। টিভি উপস্থাপক ও দেশের সমসাময়িক অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় আলোচক। অধ্যাপনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া তিনি শিশু-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গল্পকার। কবিতা, গবেষণা, শিশু-সাহিত্য, গল্প, রাজনীতি, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, ভ্রমণ ইত্যাদি বিষয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দেড় শতাধিক।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম