মডেল তিন্নি হত্যায় সাবেক এমপি অভি খালাস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন সাবেক সংসদ-সদস্য গোলাম ফারুক অভি। মঙ্গলবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাহিনুর আখতার এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলার একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আসামি অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় ভিকটিমের পরিবারের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার বিচার চলাকালে ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুব করিম আদালতে জবানবন্দি দেন এবং আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ ও সরকারিভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনজীবী তাদের যুক্তিতর্ক শেষ করেন এবং আদালত মামলার বাদীসহ ২৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
২০০২ সালের ১০ নভেম্বর বুড়িগঙ্গা নদীর ওপরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-১-এর নিচে তিন্নির লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। থানার উপপরিদর্শক শফিউদ্দিন অভিযান চালিয়ে তিন্নির সাবেক স্বামী শাফকাত আহমেদ পিয়ালসহ স্বপন গাজী, গাজী শরিফুল্লাহ তপন, শফিকুল ইসলাম জুয়েল ও সোমনাথ সাহা বাপ্পীকে গ্রেফতার করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে এবং পিয়াল ও অন্যদের নাম বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভির প্ররোচনায় মডেল তিন্নি তার স্বামীকে তালাক দেন। কিন্তু অভি এরপর তিন্নিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। তিন্নি এসব তথ্য মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন। ক্ষিপ্ত হয়ে অভি ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার পর রাতের যে কোনো সময় তিন্নিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য গাড়িতে করে কেরানীগঞ্জ থানার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-১-এর কাছে ফেলে রাখেন।
২০১০ সালের ১৪ জুলাই অভির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সঙ্গে বিভিন্ন তারিখে অভিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু অভি আদালতে হাজির হননি। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার নথিতে দেখা যায়, পলাতক অভি কানাডা থেকে তার আইনজীবী বরাবর একটি চিঠি লেখেন। এর কপি দেওয়া হয় ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলিকেও। এতে অভি দাবি করেন, ১৯৯৬ সালে বরিশাল-২ আসন থেকে তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন এবং তিনি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তিন্নি হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না। বিশ্বস্ত সূত্রে তিনি জানতে পারেন, তাকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকে তিনি দেশ ছেড়ে কানাডায় চলে যান।