Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন একসঙ্গে করা অসম্ভব: ইসি

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন একসঙ্গে করা অসম্ভব: ইসি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দিকে মনোযোগী নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময়ে এমন কোনো কিছু করা ঠিক হবে না, যা জাতীয় নির্বাচনকে ব্যাহত করবে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ‘নির্বাচন ভবনে’ নির্বাচন কমিশনের দ্বিতীয় সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হলো, মূলত সব নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। তবে সরকার যেটা সিদ্ধান্ত দেবে, সেভাবে হবে। সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকার করতে পারব। জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আইন পাশকে অসাংবিধানিক বলেও জানান এ কমিশনার।

নির্বাচন ভবনে রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনের দ্বিতীয় সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে তিনটি এজেন্ডা ছিল। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামগ্রিক ফোকাস (মনোযোগ) হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। ইসি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকলে অপরাপর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে।

মো. সানাউল্লাহ বলেন, শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠান নয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাস্তবতা হচ্ছে, একটা সংস্কার কমিশন কাজ করছে। তাদের (সংস্কার কমিশন) প্রস্তাব সামনে আসবে। এটিকে ধারণ করে আইন-বিধিমালায় কোনো সংশোধন দরকার হলে সেটা করতে একটা সময় লাগবে। দেশের আবহাওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন কোনো ঘটনা (ইভেন্ট) আসা ঠিক হবে না, যেটা জাতীয় নির্বাচনকে ব্যাহত করে। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত-মন্ত্রণালয়, সরকার, সংশ্লিষ্ট সবাই যেটা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তা বাস্তবায়ন করব। এতে সরকার যদি মনে করে, কিছু নির্বাচন আগে করব, আমাদের সেভাবে করতে হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত হলো মূলত সব নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও একসঙ্গে করা সম্ভব নয়-বাস্তবসম্মতও নয়। সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকার করতে পারব। স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের তরফ থেকে ইসি কোনো অনুরোধ পায়নি জানিয়ে এ কমিশনার বলেন, পত্রপত্রিকায় যেহেতু বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি ও আলোচনা হচ্ছে, এ কারণে কমিশন নিজ থেকেই এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ও বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ রহিত করে ২০২৩ সালে একটি আইন করা হয়। যদিও এটা কার্যকর হয়নি। গত কমিশনের সময় এ আইনটি বাতিলের জন্য একটি প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর সরকারকে একটি ডিও লেটার দেওয়া হয়। আমরা (কমিশন সভায়) আলোচনা করে তা সিদ্ধান্ত আকারে সরকারের সঙ্গে পত্রালাপে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, এনআইডি ইসির অধীনে থাকুক, এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা কোনো অ্যানালইসিসে যাচ্ছি না।

আমাদের কাছে যেটা মনে হয়েছে, এনআইডি নিয়ে যাওয়া এটা ইসিকে সাংবিধানিক সক্ষমতা যেটা দেওয়া আছে, এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সাংঘর্ষিক এজন্য যে, সংবিধান বলে দিয়েছে যে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। ২০০৭ সাল থেকে নির্বাচন কমিশন নিজে এটা ডেভেলপ করেছে। এ ডেটাবেজ থেকে ভোটার তালিকা ও এনআইডি হয়। শুধু এনআইডি প্রিন্ট করার জন্য আরেকখানে যাওয়াটা আমরা যৌক্তিক মনে করি না। বৈঠকে অংশ নেওয়া ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, সভায় নির্বাচন কমিশনের অধীনেই জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই সেবা নেওয়ার জন্য যে আইন পাশ হয়েছে, তা বাতিল করতে সরকারকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবায় হয়রানি যাতে না হয়, সেজন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, গত জুনে ইভিএম প্রকল্প শেষ হলেও এখন পর্যন্ত পুরোপুরিভাবে টেকওভার করা হয়নি। প্রশিক্ষণ বাকি ছিল। এ সপ্তাহে শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় ইভিএম ব্যবহার কতটুকু হবে-না-হবে, এ ব্যাপারে আমরা জানি না। এ ব্যাপারে সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে কিছু প্রস্তাব আসতে পারে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে মেশিনগুলো আছে, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, দায়দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা জরুরি ভিত্তিতে দায়দায়িত্ব বুঝে নেব। ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত হবে এটা ব্যবহার হবে কি হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে এ কমিশনার বলেন, ২০ জানুয়ারি বাড়ি বাড়ি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভোটার নিবন্ধনের জন্য ফরম-২-এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাঠপর্যায় থেকে আমাদের কাছে কিছু ফিডব্যাক এসেছিল যে, এই ফরম পূরণ করতে গিয়ে সাধারণ নাগরিকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাই এটা সহজীকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপকমিটিতে পাঠিয়ে সহজীকরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম