Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

১৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: সিপিবি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: সিপিবি

পতিত ফ্যাসিস্ট ও একাত্তরের ঘাতক অপশক্তি যাতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অবিচল ও নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসী অনির্বাচিত সরকারকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এজন্য ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত ‘ঢাকা সমাবেশে’ নেতারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সিপিবির ৬৩টি জেলা কমিটির নেতাকর্মীরা ছাড়াও বন্ধুপ্রতিম ছাত্র, শ্রমিক ও দিনমজুর সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর গণসংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ থেকে ২০ জানুয়ারিকে ‘পল্টন হত্যাকাণ্ড দিবস’ এবং ২০-২৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

দেশের পরিস্থিতি নাজুক উল্লেখ করে সমাবেশে সিপিবির সভাপতি শাহ আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ মাসে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের প্রকৃত তালিকা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। সিন্ডিকেটের হাত থেকে পণ্য বাজার মুক্ত করতে পারেনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অতিসত্বর নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণা করে দেশ-জাতিকে সংকটমুক্ত করতে হবে।

শাহ আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের শ্রেণিচরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা বিপ্লবও নয়, স্বাধীনতাও নয়। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার, বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, দুর্নীতি ও নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কার করে দেশকে একটি অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। অথচ ৫ মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অতীতের স্বৈরাচারের ফ্যাসিস্ট কণ্ঠ এখনো শোনা যায়। এটি আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের পথে বড় বাধা। যা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে ও সরকারকে বিতর্কিত করছে। ঢালাও মামলা ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে চলে যাবে এবং মামলার জট বাড়বে। বিচার দীর্ঘায়িত হবে।

সমাবেশে সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সরকারকে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ-একথা বিশ্বাস করলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করুন। এতে সব সমস্যার সমাধান হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মেহনতি মানুষ যে সংগ্রাম করে বিজয় অর্জন করেছে তার ফসল এবার ঘরে তুলতে হবে। লড়াই করে ঘরে চলে গেলে চলবে না। নিজেদের সরকার গঠন করতে হবে। এ বার্তা দিতে আমরা আপনাদের সামনে এসেছি। তিনি বলেন, এ সরকার বামপন্থিদের দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলনের ফসল। সব বামপন্থি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন আর নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল ও দাঁড়িপাল্লা পছন্দ করে না। ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে সরকার গঠনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চ্যাম্পিয়ন হলো কমিনিউনিস্টরা মন্তব্য করে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বৈষম্য দূর করতে হলে সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। এটা আমাদের স্বাধীনতার অঙ্গীকার। জনগণের ওপর বিশ্বাস রেখে সমাজ ব্যবস্থার পরির্তন করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কুৎসিত বয়ান দিয়ে লুটপাট করেছে। আওয়ামী লীগের বয়ানের কবর চাই। কিন্তু সেই কারণে মুক্তিযুদ্ধকে কেউ কবর দিতে আসে তাহলে আরেকবার গর্জে উঠব।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অনির্বাচিত সরকারকে দীর্ঘায়িত ক্ষমতায় দেখতে চাই না। মুক্তবাজারের মতো দেশ পরিচালনা করছে বর্তমান সরকার। তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার ও একাত্তরের ঘাতক অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। ওরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশবাসীকে এ শক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অবিচল থেকে, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখে, নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে আমরা লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রাখব।

নিত্যপণ্যের দাম কমানো, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন, ব্যবস্থা বদলের লক্ষ্যে জনগণের বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার দাবি জানান সিপিবির অন্য নেতারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম