জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিন উপদেষ্টা
দেশ পুনর্গঠনের নতুন সুযোগ এসেছে, অবহেলা না হয়
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা এলেও সেই স্বাধীনতা ছিল অরক্ষিত। ২০২৪-এর বিজয় আমাদের স্বাধীনতাকে পূর্ণতা দিয়েছে। লাখো শহিদের রক্ত এবং অনেক মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে পাওয়া স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের নতুন সুযোগ এসেছে, তাতে যেন কোনোভাবে অবহেলা না হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, একাত্তরের পর আমরা একটা মুজিববাদী ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে গিয়েছি। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের ফলে সেই বন্দোবস্ত নষ্ট হয়েছে। যেই বন্দোবস্তের কারণে বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল, বাংলাদেশের মানুষ বাকস্বাধীনতা থেকে শুরু করে স্বাভাবিক এবং মৌলিক মানবাধিকারগুলো পায়নি-আমরা আশা করি, এই ব্যবস্থার রদবদল হবে। বাংলাদেশের মানুষ সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা পাবে এবং এই স্বাধীনতা তারা রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, জনগণকে আহ্বান জানাই, এবার যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, দুই হাজারের ওপরে শহিদ এবং ৫০ হাজারের কাছাকাছি মানুষের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে। ৩০ লাখ শহিদ এবং অনেক মা বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে একাত্তরে এ রাষ্ট্র পেয়েছিলাম। এখন এই রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের সুযোগ পেয়েছি। এ সুযোগে যেন আমরা কোনোভাবে অবহেলা না করি। এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ যেন করি সব রাজনৈতিক দল ও মানুষ। তিনি আরও বলেন, আমরা এবারের বিজয় দিবস স্বাধীন-মুক্তভাবে উদযাপন করতে পারছি। আমরা চাচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষ এই স্বাধীনতা ধরে রাখুক। জনগণ আমাদের সঙ্গে থাকুক।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা এলেও সেই স্বাধীনতা ছিল অরক্ষিত। ২০২৪-এর বিজয় আমাদের স্বাধীনতাকে পূর্ণতা দিয়েছে। দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪-এর বিজয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশে জনগণ প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ অনুভব করছে। মহান স্বাধীনতাসংগ্রাম ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শহিদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ফ্যাসিজম ও আধিপত্যবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্রজন্মের জন্য এই বিজয় দিবসটিই হয়তো বোধ-বুদ্ধি হওয়ার পর একটা প্রকৃত বিজয় দিবস। এর আগের বিজয় দিবসগুলো কী উদযাপন করব, স্বাধীনভাবে কথাই বলতে পারতাম না। এটা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি। তিনি বলেন, অবশ্যই একাত্তরে একটি রাষ্ট্র হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য যে শহিদরা জীবন দিয়েছেন, তারাও এই প্রাপ্তির সবচেয়ে বড় অংশীদার। সুতরাং একান্তার থেকে চব্বিশ এবং আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির যে সংগ্রাম-এই চলমান সংগ্রামে আমরা দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয়, তা সফল করতে চাই।