সংস্কার কমিশনকে সরকারি কর্মকর্তারা
নির্বাচনে অনিয়মের জন্য দায়ী পুলিশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের জন্য দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের দায়ী করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, নির্বাচনে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা অসহায় ছিলেন। তাদের তেমন কিছু করার ছিল না। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কথা শুনতেন না। বাংলাদেশ একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। রোববার সংসদ ভবনে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এমনই বক্তব্য দেন সরকারি কর্মকর্তারা। বৈঠকের পর এসব তথ্য জানান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ৩০ জনের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করে কমিশন। পরে আলোচনার বিষয়ে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, উনারা ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন, নির্বাচনে তেমন কিছু করার ছিল না। কলকব্জা অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে। এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা ছিলেন, তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তাদের মূল বক্তব্য ছিল-এ দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। এ কারণে নির্বাচন এমন হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়ম বন্ধে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কথা শোনেনি। ওই সময়ে তাদের সামনে একমাত্র পথ ছিল পদত্যাগ করা। প্রতিবাদ করার সুযোগ ছিল না। প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
নির্বাচনকালীন সরকারের ওপর নির্বাচনের স্বচ্ছতা নির্ভর করে জানিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কর্মকর্তারা আরও বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে এর বিকল্প নেই। তারা বলেছেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করতে প্রস্তুত নই। তার মানে নির্বাচনের সময় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকতে হবে। তা না হলে কিন্তু একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
সংস্কার কমিশনের সদস্য মীর নাদিয়া নিভিন বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্য কমানো ও প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাইয়ের আলোচনা উঠলে কর্মকর্তারা জানান, হলফনামা আরও ভালোভাবে যাচাই করা যাবে। তবে এর সঙ্গে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে। এছাড়া বৈঠকে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা থেকে ভোট পর্যন্ত যে সময় দেওয়া হয়, তা নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অনেক কম বলে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।