চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা
প্রধান আসামি চন্দন ভৈরবে গ্রেফতার
চট্টগ্রাম ব্যুরো ও ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে সিএমপির কোতোয়ালি থানা ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে ভৈরব থেকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারের পর চন্দন যুগান্তরকে জানান, তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন। নেশার ঘোরে আইনজীবীকে মারধর করেছিলেন।
চন্দন নগরীর কোতোয়ালি থানার বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মৃতধারী দাসের ছেলে। আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার এজাহারে তার নাম ১ নম্বরে রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপির এডিসি (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ।
সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার অন্যতম আসামি চন্দনকে গ্রেফতার করতে একাধিক টিম মাঠে কাজ করছিল। সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে নিশ্চিত হয়, চন্দন ভৈরব এলাকায় অবস্থান করছে। পরে সোর্সের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব।
সোমবার রাতে ডিবির একটি টিম কিশোরগঞ্জে পাঠানো হয়। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে চন্দনকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি কৌশলে ডিভাইস থেকে দূরে অবস্থান করছিলেন। বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায়, আবারও তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। ওইদিন সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশ ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে সিএমপির ডিবি ও ভৈরব পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
সিএমপির এডিসি (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ যুগান্তরকে জানান, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, চন্দন আইনজীবী সাইফুলকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে একের পর এক আঘাত করছেন। এ সময় তার পরনে কমলা রংয়ের গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট ছিল।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন মিয়া জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চন্দন জানায়, সে ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে রাত সাড়ে ৭টায় ভৈরব রেলস্টেশনে নামে। তার শ্বশুরবাড়ি ভৈরবের মেথরপট্টিতে। ট্রেন থেকে নেমে সে স্টেশনে ঘোরাঘুরি করছিল। তার ইচ্ছা ছিল রাত গভীর হলে শ্বশুরের বাসায় যাবে। এরই মধ্য তাকে গ্রেফতার করা হয়।
চন্দন ভৈরব থানায় যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার দিন আমি নেশাগ্রস্ত ছিলাম। আমি দেখলাম, আমার সঙ্গীরা আইনজীবীকে মারধর করছে। নেশার ঘোরে আমিও তাকে মারধর করেছি। পরে শুনি তিনি মারা গেছেন। আমি আসামি হয়েছি খবর পেয়ে পালিয়ে যাই।
২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন আবেদন নাকচ করে ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬ কাজী শরিফুল ইসলাম। সেদিন তাকে বহন করা প্রিজন ভ্যান দুপুর ১২টা থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত আটকে রাখেন তার অনুসারীরা।
এ সময় চিন্ময় অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিক্ষুব্ধ অনুসারীরা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকদের অন্তত ৫০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদ করলে আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় চিন্ময় অনুসারীরা। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
সাইফুল হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।