সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শারীরিক অবস্থা ঠিক থাকলে আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে গুলশানের বাসা থেকে বের হবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে ২০১৮ সালের পর খালেদা জিয়া প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট সফর করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ২০১২ সালে সেনাকুঞ্জে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২০১৩ সালে আমন্ত্রণ পেলেও তিনি যাননি। তবে ওই সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতা গিয়েছিলেন।
এরপর এই দিবসে কয়েক বছর বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও পরে আর আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে।
আরও জানা যায়, খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির ২৬ জন আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এর মধ্যে আরও রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান এবং দলটির রাজনীতিতে যুক্ত সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ২১ নভেম্বর সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। রাতে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল এএসএম কামরুল আহসান এ আমন্ত্রণপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে পৌঁছে দেন। এদিন দুপুরের দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৬ সিনিয়র নেতার নামে আমন্ত্রণপত্র গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তারের কাছে সেনা কর্মকর্তারা পৌঁছে দেন।
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
অভিনন্দন জানিয়ে তারেক রহমানের বাণী : এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্য ও তাদের পরিবারের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে এ দিনে সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
তারেক রহমান বলেন, সশস্ত্র বাহিনী সাহস, শৌর্য এবং শৃঙ্খলা দিয়ে তৈরি জাতির এক গর্বিত প্রতিষ্ঠান। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায়। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর দেশপ্রেমিক সদস্যরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিশ্বশান্তি রক্ষায়ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অগ্রগণ্য। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা বাহিনীতে কর্মরত আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কর্মদক্ষতা ও উঁচুমানের পেশাদারির পরিচয় দিয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনছে। দেশের সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনী বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে আজ জাতির আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সংগতি রেখে একটি আধুনিক, গতিশীল ও দক্ষ পেশাদার বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছিলেন। এ দিনে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি।
বাণীতে তারেক রহমান বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে নিজের জীবনদানকারী বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ ও বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফকে। তিনি বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী সুশৃঙ্খল, ক্ষিপ্র ও সদা তৎপর এক আধুনিক বাহিনীতে পরিণত হয়, যা বিশ্বের যে কোনো আধুনিক রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সমকক্ষ। পরবর্তী সময়ে বিএনপি সরকারে থাকতে সশস্ত্র বাহিনীকে শহিদ জিয়ার গৃহীত কর্মসূচির ধারাবাহিক বাস্তবায়নের অগ্রগতি সাধিত করে এই বাহিনীকে আরও আধুনিকায়ন ও একে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের এ প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।’