অধরা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর দুর্নীতিবাজ শীর্ষকর্তারা
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে বড় রদবদল
মুজিব মাসুদ
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বড় ধরনের রদবদল করা হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি)। একদিনে ২১ জন প্রভাবশালী কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা ও নসরুল হামিদ বিপু সিন্ডিকেটের সদস্য। অভিযোগ আছে-আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে এই সিন্ডিকেট বিদ্যুৎ খাতে চালিয়েছিল ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। এক যুগ ধরে এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়েছেন খোদ সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানসহ সাবেক ২ চেয়ারম্যান। আর সিন্ডিকেট হোতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে সব অপকর্মকে নির্বিঘ্ন করতে যারা কলকাঠি নাড়তেন, তারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও আহমেদ কায়কাউস।
ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও আবুল কালাম আজাদ। পিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। বাকি দুই চেয়ারম্যানও পলাতক রয়েছেন। দেশের বাইরে থাকায় আহমেদ কায়কাউস এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। তবে অভিযোগ আছে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অনেক প্রভাবশালী শীর্ষ কর্মকর্তা ও রাঘববোয়ালরা বহাল তবিয়তে আছেন। এদের মধ্যে অনেক রাঘববোয়ালের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও কেন্দ্র নির্মাণে মেশিনারির আমদানির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে। নিুমানের ও পুরোনো মেশিনারিজ আমদানির নামে একটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আছে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও আহমেদ কায়কাউসকে মোটা অঙ্কের ডোনেশন দিয়ে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পুরোনো মেশিনারিজগুলো আমদানি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় যাদের মাধ্যমে ওই মেশিনারিজ ও ইকুইপমেন্টগুলো আমদানি করা হয়েছে তাদের আবার সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ওই কোম্পানি গত কয়েক বছর ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর স্পেয়ার পার্টস কেনাকাটার নামে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করছে এবং বিদেশে টাকা পাচার করে চলছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর পিডিবির এক অফিস আদেশে যাদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম রয়েছেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা বিউবোর বাণিজ্যিক পরিচালন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম। তাকে বিউবোর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) পদে বদলি করা হয়েছে। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেনাকাটাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আছে। এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সিন্ডিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যানে চিফ স্টাফ অফিসার মনিরুজ্জামানকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন পরিদপ্তরের পরিচালক করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরিদপ্তর বিভাগের পরিচালক সাধন চন্দ্র দেকে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক পদে বদলি করা হয়েছে। সাধন চন্দ্র দে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের অন্যতম নেতা। অপর পরিষদ নেতা পরিচালক এসবিইউ পরিদপ্তরের পরিচালক জাকিয়া নাজনিন পান্নকে ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট রি-পাওয়ার্ড কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক করা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ নেতা নকশা ও পরিদর্শন-১ পরিদপ্তরের উপপরিচালক আশিক ইমরানকে ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে বদলি করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানকে নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচালন পদে বদলি করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স শহীদুল ইসলামকে শাহজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে বদলি করা হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা ছিলেন। বিউবোর বিতরণ বিভাগের উপসচিব জাহাঙ্গীর আলম জুয়েলকে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সপ্তম ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী পদে বদলি করা হয়েছে। তিনিও বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা। নকশা ও পরিদর্শন-২ পরিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তানভীর মাহমুদুল হাসানকে বাঘাবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী পদে বদলি করা হয়েছে। তিনিও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ নেতা।
এছাড়া বিএনপিসহ বিগত আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন প্রকৌশল পরিষদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে অনেক যোগ্য ও দক্ষ অফিসারদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। এবারের বদলির সঙ্গে বিএনপিপন্থি প্রকৌশলীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী প্রকৌশল পরিষদের অনেক নেতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিভাগের আ.ন.ম ওবায়দুল্লাহকে বিউবোর বাণিজ্যিক পরিচালক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক পদে বদলি করা হয়েছে। চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কমবাইন্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক নুরুল আবছারকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরিদপ্তরের পরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে। রাউজান চারশ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক নান্নু মিয়াকে ক্রয় পরিদপ্তরের পরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে। ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শফিকুল হুদাকে কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে বদলি করা হয়েছে। ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকতার হোসেনকে নকশা ও পরিদর্শন-১ এর উপপরিচালক করা হয়েছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল আনামকে বিতরণ বিভাগের উপসচিব করা হয়েছে। এর আগে এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বিদ্যুৎ বিভাগের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ আছে, সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের অন্যতম সিন্ডিকেট সদস্য মনিরুজ্জামানকে অন্যত্র বদলি করা হলেও তার ডান হাত হিসাবে পরিচিত কর্মচারী পরিদপ্তরের উপপরিচালক বনি আমিন এবং আইপি সেল-১ এর পরিচালক শামসুজোহা কবীর এখনো বহাল তবিয়তে থেকে সব ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সদস্যদের পিডিবি থেকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া থেকে শুরু করে অনুমোদন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০টি ধাপে সিন্ডিকেটকে টাকা দিতে হতো। এর মধ্যে ছিল প্ল্যানিং, সাইট ভিজিট, মেশিনপত্র অনুমোদন দেওয়া, নেগোসিয়েশন, প্রকল্পের সাইট সিলেকশন, মাটি ভরাট, জমি ক্রয়, বিদ্যুৎ ক্রয়ের দরদাম ঠিক করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা বা কমিশনিং, মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠানো, ক্রয় অনুমোদন, বিল অনুমোদন, বিল ছাড় করা-অর্থাৎ প্রতিটি খাতে এ সিন্ডকেটকে টাকা দিতে হতো।
পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন কোম্পানির নানা কেনাকাটা এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পার্চেজসহ লোভনীয় কমিটিতে পছন্দের কর্মকর্তাদের রাখা, পদোন্নতি, পোস্টিং দিয়েও এ চক্র হাতিয়ে নিত কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে যাওয়ার জন্যও এ সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য ছিলেন পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানসহ সাবেক দুই চেয়ারম্যান ও একাধিক প্রধান প্রকৌশলী ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন। পাশাপাশি নানা কাজের মূল কারিগর ছিলেন পিডিবির বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতা। আলোচ্য সময়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ১০০টির বেশি কোম্পানির পকেটে ঢুকেছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। আরও জানা যায়, দুর্নীতির নানা পরিকল্পনা যারা তৈরি করতেন অর্থাৎ পিডিবির বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতাদের জন্য খোদ পিডিবিতে ছিল আলাদা একটি অফিস। যদিও বর্তমান চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়ে ওই অফিস বন্ধ করে দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টদের অভিমত-বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে কৃতিত্বের দাবিদার আওয়ামী লীগ সরকার ও নসরুল হামিদ বিপু। তবে সরকারের এই সাফল্য ম্লান হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে। পরিবারের লোকজন ছাড়াও এ সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন তার সাবেক একান্ত সচিব (পিএস) রোকন উল হাসান, সেলিম আবেদ, পিডিবির সাবেক দুই চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও খালিদ মাহমুদ। এছাড়া সাবেক আইপিপি সেলের প্রধান ও পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া, বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম। এছাড়া পিডিবির বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সাবেক সভাপতি এবিএম সিদ্দিক, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি রায় ও ক্রয় বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ।
প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তার চিফ স্টাফ অফিসার মনিরুজ্জামান, ডেপুটি ডাইরেক্টর (পারসোনাল) বনি আমিন, জেনারেল ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) মফিজুর রহমান, আইপিপি সেল-১-এর পরিচালক শামসুদ্দোহা কবীর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগের প্রধান নিরোধ চন্দ্র মন্ডল ও ডিজাইন বিভাগ-১-এর পরিচালক তারেক আবদুল্লাহ অন্যতম। তারা সবাই মিলে বিদ্যুৎ আর আইটি সেক্টরে গড়ে তুলেছিলেন একটি শক্তিশালী মাফিয়া সিন্ডিকেট। আর হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ। পিডিবির আইপিপি সেলের দায়িত্বে ছিলেন প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশেষ ক্ষমতা আইনে যত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হয়েছে, সেগুলোর সাইট ভিজিটের দায়িত্বে ছিলেন। মূলত তিনি কেন্দ্রগুলো ভিজিট করে রিপোর্ট দিলেই সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্র অনুমোদন হতো। জানাগেছে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সভাপতি ছিলেন ড. এবিএম সিদ্দিক। তার সরকারি রুমের পাশাপাশি তিনি পিডিবিতে আলাদা রুম বরাদ্দ নিয়েছিলেন তদবির আর বিভিন্ন বাণিজ্য করার জন্য। এই রুমে বসে লেনদেন হতো কোটি কোটি টাকা। এই পরিষদের নেতা ছিলেন প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন। তিনিও পিডিবির চিফ ইঞ্জিনিয়ার হন সিন্ডিকেটের সহযোগিতায়। কাজল কান্তি রায় ছিলেন এ পরিষদের সদস্য। ক্রয় বিভাগের পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ ইউসুফ। দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগের তদন্ত করেনি কমিশন। জানা যায়, নসরুল হামিদ ও মাহবুবুর রহমানের কল্যাণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি দুদক।