Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

লগি-বৈঠার তাণ্ডব দিবসের সভায় ডা. শফিকুর রহমান

শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট বলেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে

আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ চাই- মির্জা আব্বাস

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট বলেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে

শেখ হাসিনা রাজনীতিবিদ নয়, ফ্যাসিস্ট বলেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে- এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, চোর, ডাকাত, খুনি, অপরাধী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরাই পালিয়ে যায়, কোনো ভালো মানুষ পালায় না। তারা (আওয়ামী লীগ) যে অপরাধ করেছে তা তাদের পালানোর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে (রমনা) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবের প্রতিবাদে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত।

শফিকুর রহমান বলেন, এখন আওয়ামীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়তো তাদের বিচার শেষ করতে পারবে না। কিন্তু শুরুটা তাদেরই করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কাল্পনিক অভিযোগ দাঁড় করিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচারিক হত্যা করেছে। পুরো জাতিকে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। পুরো জাতি ছিল একদিকে আর আওয়ামী লীগ তার শরিক ১৪ দলকে নিয়ে ছিল জনগণের বিপরীত দিকে। যারা জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, এখন তারা জনগণের কাছে ভোট চাইবে কীভাবে প্রশ্ন রেখে আমিরে জামায়াত বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে কিংবা ভোটে বিশ্বাসী নয়। তারা ভিনদেশিদের সহায়তায় ক্ষমতা দখলে বিশ্বাসী। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নিকৃষ্টতম একটি দিন ২৮ অক্টোবর। ২০০৬ সালের এই দিনে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত সমাবেশে শেখ হাসিনার প্রকাশ্য নির্দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করে। সেদিন লগি-বৈঠার তাণ্ডবে দেশ, রাজনীতি, সমাজ তার পথ হারিয়েছিল।

এদিন জামায়াতের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে অংশ নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আত্মত্যাগের অংশ হচ্ছে ৫ আগস্টের বিপ্লব। আগে আমাদের দাবি ছিল হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চাই। এখন দাবি হচ্ছে আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ চাই। আওয়ামী লীগের গুপ্তচর পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের স্তরে স্তরে রয়ে গেছে। এদের বহাল রেখে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। আওয়ামী লীগের দোসররা প্রশাসন থেকে প্রতিদিন নতুন নতুন থিউরি বের করে। আবার এই থিউরি আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের মুখ দিয়েও তারা প্রচার করে।

মির্জা আব্বাস বলেন, জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও অন্যান্য দল বিভিন্ন কথা না বলে, যদি একটি কথায় আসতে পারি, যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে দেশটা পুনর্গঠিত হবে। না হলে এই দেশটা নিয়ে সারা জীবন আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত কিন্তু খেলতেই থাকবে। এটা কখনোই হতে দেওয়া যাবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, খুন, গুম, ভোট ডাকাতির ইতিহাস রচনা করেছে। মানুষ তার শাসনামলে জুলুম-নির্যাতনে দিশেহারা ছিল। তার মৃত্যুর পর দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। পরে বাংলাদেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে রাজনীতির ময়দানে গ্রহণ করেনি।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, খেলাফতে মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুদ্দীন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, হেফাজতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা নায়েবে আমির মুফতি এজহারুল ইসলাম চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সদস্য সচিব ফারুক হাসানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম