চাকরিতে প্রবেশে ৩৫ বছর নির্ধারণ প্রস্তাবে ভুল
ছবি: সংগৃহীত
ভুলের কারণে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণসংক্রান্ত প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে ফেরত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীদের বয়সসীমা কত হবে তা সুনির্দিষ্ট ছিল না। ভুল প্রস্তাবটি সংশোধনের পর উপদেষ্টা পরিষদের যে কোনো বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধন করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি। জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম যুগান্তরকে বলেন, কেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি ফেরত দিতে অনুরোধ করেছে তা আমার পরিষ্কার জানা নেই। তিনি আরও জানান, যতদূর মনে পড়ে বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা হবে-এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশন এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাবটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনার এক পর্যায়ে প্রশ্ন ওঠে মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা কত হবে। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা প্রার্র্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ নির্ধারণ করা আছে। তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৭ বছর হবে? অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা কী ৩২ থাকবে, না ৩৫ বছর অথবা ৩৭ বছর হবে। বিষয়টি প্রস্তাবে বলা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণের খসড়া প্রস্তুত করেছে লেজিসলেটিভ বিভাগ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। নতুন করে প্রস্তাবটি আবার প্রস্তুত করে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
সেক্ষেত্রে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধন করতে হবে। কারণ সরকারি চাকরি আইনে বলা হয়েছে অমুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর। সরকারি চাকরি আইনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অ-মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থীর ৩০ এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থীর ৩২ বছর হবে-এমনটি উল্লেখ নেই। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা পরিপত্রে বলা আছে। মূল চাকরি আইন-২০১৮তে বলা নেই। ফলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা উপদেষ্টা পরিষদ যা নির্ধারণ করবে তা সরকারি চাকরি আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে কারণে এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী এবং চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারণের প্রস্তাব একসঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী যে কোনো বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।