চক্রান্তে আছেন কিনা দেখতে হবে
ছাত্রলীগ করা রাষ্ট্রপতি হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন: রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগ করা রাষ্ট্রপতি পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি তো শেখ হাসিনারই দেওয়া। রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন, যুবলীগ করতেন। শেখ হাসিনা মনোনীত রাষ্ট্রপতির কণ্ঠের সুর ভিন্নখাতে প্রবাহিত হচ্ছে। উনি (রাষ্ট্রপতি) বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি’। যে স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য লোকের কাছে চলে যায়, সে কি ডিভোর্স লেটার দিয়ে যায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে শহিদদের পরিবারকে সোমবার বিএনপির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, পলাতক শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়ে যাননি, হতে পারে এটা। কিন্তু আমরা জানি তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব পালনের চেয়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালনে বেশি ইচ্ছুক। প্রথমদিকে ছাত্র-জনতার যে উত্তাল রূপ, সেসময় কিছু বলেননি। কিন্তু এখন ক্রমান্বয়ে শেখ হাসিনার অনুগামী হয়ে কথা বলছেন। কোনো ধরনের চক্রান্তের সঙ্গে তিনি আছেন কি না দেখতে হবে।
এ সময় শহিদদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবির রিজভী। এদিন সাভার ও আশুলিয়ায় ৭ জন শহিদ ও ৩ আহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধিদল। প্রথমে সাভারে ব্যাংক টাউনে শহিদ ইয়ামিনের বাসায় শহিদ ইয়ামিন, শহিদ নাফিসা হোসেন ও আহত ইসমে আজমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর আশুলিয়ার কালার টেকের কাইচাবাড়িতে শহিদ মামুন বিপ্লবের বাসায় শহিদ মামুন বিপ্লব, শহিদ আব্দুস সাবুর, শহিদ সাজ্জাদ, শহিদ বাইজিদ এবং আহত হান্নান ও আকাশ মিয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে রিজভীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল।
শহিদ ইয়ামিন ও নাফিসার পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহয়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি বলেন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। না পারলে ফ্যাসিবাদের দোসররা আবার যদি ফিরে আসে, তাহলে এর দায় এই বর্তমান সরকারকে নিতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খোন্দকার আবু আশফাক, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সংগঠনটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, শাহাদত হোসেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি, সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুর মোর্শেদ ইমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আউয়াল প্রমুখ।
পাবনা প্রতিনিধি জানায়, রোববার সন্ধ্যায় পাবনার বেড়ায় অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন নিয়ে একেকজন একেক কথা বলছেন। কিন্তু সংস্কার কবে শেষ হবে, তা বলছেন না। নির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ দিচ্ছেন না। এমন উপসংহারবিহীন কাজের জন্য জনগণের মধ্যে সংশয় জাগছে। এটা যদি শেষ না হয়, তাহলে মানুষ অন্যকিছু ভাবতে শুরু করবে।
বিএনপির সাবেক সংসদ-সদস্য মরহুম আব্দুল আওয়ালের স্মরণে বেড়া উপজেলার কৈটলা ইউনিয়নের জয়নগর ঈদগাহ মাঠে স্মরণসভা হয়। সভাপতির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ-সদস্য একেএম সেলিম রেজা হাবিব, জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় নেতা হাজি ইউনুছ আলী, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান মাস্টার, যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল হক বাবু, ফজলুর রহমান ফকির প্রমুখ।