বেক্সিমকোসহ ৭ কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কর ফাঁকি ও ঋণ কেলেঙ্কারিতে আলোচিত ৭ গ্রুপ অব কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এগুলো হচ্ছে বেক্সিমকো, এস আলম, ওরিয়ন, নাসা, বসুন্ধরা, সামিট গ্রুপ এবং থার্ড ওয়েব টেকনোলজিস লিমিটেড (নগদ)। এসব কোম্পানির মালিকদের আয়কর ফাঁকির অনুসন্ধান চলমান থাকায় যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরকে (আরজেএসসি) এসব কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তর না করতে অনুরোধ জানিয়েছে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।
রোববার আরজেএসসিতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন অনুযায়ী এনবিআর কর ফাঁকি রোধে সম্পত্তির অন্তর্বর্তীকালীন অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোকের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। চলমান তদন্ত অনুযায়ী এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগসহ আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ আছে। তাই এসব কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তর (ক্রয়-বিক্রয় এবং দান) স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। এর আগে ২০ আগস্ট দেশের ৬টি শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য কর ফাঁকি অনুসন্ধানে নামে সিআইসি। এগুলো হলো-বেক্সিমকো, এস আলম, বসুন্ধরা, সামিট, নাসা ও ওরিয়ন। এস আলম গ্রুপের সম্ভাব্য কর ফাঁকির বিষয়ে অনুসন্ধান আগে শুরু করে কর অঞ্চল-১৫। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সামিট গ্রুপ আলোচিত নাম। এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ৩ ছেলের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অনুসন্ধান চলছে। এ গ্রুপের আবাসন, ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে। ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যানের নাম ওবায়দুল করিম।
সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের করসংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। ব্যাংক লেনদেনের তথ্য এবং কর নথিতে দেখানো সম্পদের পাশাপাশি বেনামি সম্পদও খোঁজা হচ্ছে। এর আগে সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করে কর অঞ্চল-১৫। এনবিআর জানিয়েছে, বিভিন্ন পন্থায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির বিশেষ অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থার সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)। সিআইসি বর্তমান সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ পর্যালোচনা এবং সুনির্দিষ্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা করেছে। তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সঞ্চয় অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রীসহ অনেকের ব্যাংক হিসাব তলব ও স্থগিত করা হয়েছে।