Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

বিচারের আগে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই

গণভবন হবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ * দলের বিচারের ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত রূপরেখা দেবে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিচারের আগে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, বিভিন্নভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি, বিচারের আগে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। 
ফ্যাসিবাদীদের সব ধরনের কার্যক্রম বিচারের আগ পর্যন্ত স্থগিত থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসাবে পরিচিতি শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ‘গণভবন’ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসাবে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে। 

একই সঙ্গে দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচারের বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, দলের বিচারের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিচারের যে বিষয়টা সেটা আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। আইন মন্ত্রণালয় খুব দ্রুতই একটা সুস্পষ্ট রূপরেখা যে বিচারটা কিভাবে হবে সেটা সবার সামনে উত্থাপন করবে। 

এ বিষয়টি দেশের জনগণ ডিসাইড করবে। যেহেতু একটা গণহত্যা আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে এ দেশে, সেই গণহত্যার দায় নিয়ে তারা কিভাবে ফিরবে বা তাদেরকে ফিরতে দেওয়া হবে কিনা-এটা জনগণ ডিসাইড করবে, এটা জনগণের সিদ্ধান্ত। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয়ে জানাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর লক্ষাধিক জনতা গণভবনের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এর কিছুক্ষণ আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারযোগে ভারতের ত্রিপুরা হয়ে দিল্লি চলে যান। হাজার হাজার মানুষ গণভবনে ঢুকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলে। ওই ভবনের সব মূল্যবান আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। পরে অবশ্য লুট হওয়া অনেক জিনিসপত্র কেউ কেউ স্বেচ্ছায় ফেরতও দিয়ে যায়।

আগস্টের শুরুতে সংঘটিত ছাত্র-নাগরিকের এই অভ্যুত্থানে প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। ওই সংঘাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও অর্ধশতাধিক সদস্য নিহত হন। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের যে ‘গণভবন’ আছে এটা নামের মতো গণভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ দেশের ছাত্র-সাধারণ জনতা একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটাকে জয় করেছে। এটাকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহিদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে সব স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। খুব দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। আরও সিদ্ধান্ত হয়, জুলাই গণহত্যার শিকারদের তালিকা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা শহিদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সম্মেলন করবেন। 

জনগণ যেভাবে বিজয় করেছে সেই অবস্থাতেই রাখা হবে গণভবন। এর মধ্যেই ভেতরে একটা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করব। যাতে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করায় ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ত্রাণ কার্যক্রম চলমান। 

পুনর্বাসন কার্যক্রমও শুরু করেছি। অনেকগুলো এনজিও’র সঙ্গে সরকারের মেলবন্ধনের মাধ্যমে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাদের বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। শ্রম খাতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি কিছুদিন ধরে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে এ উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। ক্যাবিনেটেও আলোচনা হয়েছে। আজকের (বৃহস্পতিবার) পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আছে। 
শ্রমিকদের যে কোনো দাবি-দাওয়া বা সমস্যা সমাধানের জন্য একটা রিভিউ কমিটি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব দ্রুত এ কমিটি ঘোষণা করা হবে। যাতে শ্রমিকরা তাদের সব দাবি-দাওয়া নিয়ে যেতে পারে। রিভিউ কমিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করে যাবে। সেখানে শুধু গার্মেন্ট নয়, সব শ্রম খাত অন্তর্ভুক্ত হবে।

এছাড়া জাতীয় জিন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৪-এর খসড়া পরীক্ষাপূর্বক হালনাগাদ ও পরিমার্জনের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক করে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রেস উইং থেকে বলা হয়, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্ভূত ঝুঁকি মোকাবিলা, টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা পূরণে কৌলিসম্পদের গুরুত্ব অনুধাবন, যথাযথ সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহারের লক্ষ্যে ‘জাতীয় জিন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৪ খসড়া প্রণয়নপূর্বক উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। জাতীয় জিন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৪ এর খসড়া পরীক্ষাপূর্বক হালনাগাদ ও পরিমার্জনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম