Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ব্রিফিং

অশান্তি সৃষ্টি করা হলে শক্ত হাতে দমন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অশান্তি সৃষ্টি করা হলে শক্ত হাতে দমন

অশান্তির সৃষ্টি করা হলে শক্ত হাতে দমন করা হবে। কারণ আন্দোলন এখন জনগণ ও ছাত্রদের অধিকারের জায়গায় নেই। এখন চলছে বিএনপি-জামায়াতের সংঘাত ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। রোববার গণভবনে নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবর যাদের মোকাবিলা করেছি তারাই এখন সামনে চলে আসছে। এটি আওয়ামী লীগের প্রতি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। তারা যে সন্ত্রাস করছে সেটি এখন রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গরূপে তা দমন করা হবে।

সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলনকারী যারা দাবি জানাচ্ছে এবং মৃত্যু ও হতাহতের ঘটনায় সাধারণ নাগরিকের আবেক-অনুভূতি ও বিচারের দাবির সঙ্গে আমরা একমত এবং সে স্প্রিটকে শ্রদ্ধা করি। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে চাই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে বিএনপি একাত্মতা প্রকাশ করেনি। বরং আগে একই দাবি ছিল বিএনপির। শনিবার আন্দোলনকারীরা একদফা দাবি জানিয়ে বিএনপির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এখন আর তারা আলাদা থাকছে না। এটি এখন বিএনপি-জামায়াতি হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, এতদিন আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল কোটা, সেটি পূরণ হলো, এরপর দাবি ছিল আলোচনার, সেটির দ্বার খুলে দেওয়া হলো, তারপর দাবি নিহত ও আহত ঘটনার বিচার, সেটি বাস্তবায়নে জুডিশিয়াল কমিশন গঠন ও বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনার ব্যবস্থা করা হলো। এর মাধ্যমে সব দাবি পূরণ হলো। এরপর তারা এখন দিচ্ছে একদফা দাবি। অর্থাৎ ওইখানে (নির্দিষ্ট লক্ষ্যে) তাদের যেতে হবেই। তারা বরং বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নিজের পরিচয় নষ্ট করেছে।

শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অসহযোগ কর্মসূচিতে দেশব্যাপী ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কিছু অংশ তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তার দেওয়া তথ্যমতে, ঢাকার সিএমএম কোর্ট, এসিল্যান্ড অফিস (দুপচাঁচিয়া), গাইবন্ধারার ডিসি ও এসপি অফিস, বিভাগীয় কমিশনার অফিস (ময়মনসিংহ), আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস (রংপুর), নারায়ণগঞ্জের ডিসি অফিস, নেত্রকোনায় পুলিশ স্টেশন থেকে আট অস্ত্র লুট, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ইউএনও’র বাসা ভাঙচুর, বগুড়ায় সদর এসিল্যান্ড অফিস ও আওয়ামী লীগের অফিস, ভোলায় আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস, কিশোরগঞ্জের পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব অগ্নিকাণ্ড সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ঘটনা তুলে ধরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরপরও আরও অনেক ঘটনা ঘটাচ্ছে। এটি পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে আন্দোলন তার জায়গা থেকে সরে গিয়ে এখন সন্ত্রাস ও সহিংসতায় চলে গেছে।

এ সময় তিনি বলেন, সরকার সহনশীল থাকলেও রোববার তারা সংঘাত দিয়ে শুরু করেছে। আমরা কোথাও কিন্তু নেই, আমাদের এই অনুপস্থিতি দুর্বলতা হিসাবে নেওয়া হচ্ছে। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত হলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে। যে কারণে আমরা একেবারেই শান্তিপূর্ণ থাকছি। এতে আজ (রোববার) সকালবেলা দেখছেন সন্ত্রাসীরা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে কীভাবে আগুন লাগাচ্ছে। এখানে ভর্তি আছে রোগীরা, তারা কী দোষ করল। এ সময় যুক্তরাজ্যের একটি উদাহরণ টেনে বলেন, কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যে গুজবের কারণে সংঘাত হয়েছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দ্য রায়টস উইল ফেইস দ্য ফুল ফেইস অব ল।’ এর অর্থ যারা সংঘাত-সংঘর্ষ করছে তাদের ওপর আইনের পূর্ণাঙ্গ দমন করা হবে। তারাও বলছে এবং গোটা দুনিয়াও তাই বলে। এখন আমাদেরও কথা হচ্ছে আইনের প্রয়োগ হবে। আমরা সন্ত্রাস দমন করব। প্রধানমন্ত্রী এই সন্ত্রাসীদের দমন করতে জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে কিছুই করতে পারবে না। একটি সুস্থ ও গণতন্ত্র পরিবেশ থাকলেই আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। আমরা এখনো ধৈর্য ধরেছি, এখনো ধৈর্য ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ডাক দিলে অনেক সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। সারা দেশে অনেক নেতাকর্মী রয়েছে। আমরা সংঘাত এড়ানোর জন্য আলোচনার দরজা খোলা রেখেছি। সংঘাতে যেতে চাই না। আমরা শান্তির পক্ষে, আলোচনার পক্ষে এবং ইতোপূর্বে সহিংসতার ঘটনায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। অনেকে বলছেন, আহত ও নিহতের মধ্যে অনেক শিশুও ছিল। এই শিশুদের জন্য অনেকে কেঁদেছেন, মনোকষ্ট আছে। অনেকে রাস্তায়, কেউ টিভির সামনেও কেঁদেছেন, সেটি দেখেছি। কিন্তু আমি তো মনে করি এই মৃত্যুগুলোর জন্য ১৭ কোটি মানুষই কাঁদছে, হয়তো সবারটা দেখা যাচ্ছে না। কারা এই হত্যাগুলো করেছে সেটি অনুসন্ধান করে জানতে হবে। নিহত শিশুগুলো সরকার পতন আন্দোলন করেনি, তারা বেঁচে থাকলে সরকারের কী ক্ষতি হতো এমন প্রশ্ন রেখে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশুগুলোর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সরকারের কী লাভ হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো আমি সাধারণ মানুষের বিবেকের কাছে করতে চাই। এই মৃত্যুগুলো ও লাশের ওপর দাঁড়িয়ে কারা এই সুবিধা নিয়েছে, মানুষকে উসকে দিয়ে বিপথে পরিচালিত করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন মৃত্যু ঘটনার জন্য বিচার চাওয়ার আগেই রায় দিয়ে দিচ্ছে, এর মানে তারা বিচার চায় না। আমরা বলছি বিচার চাই, এজন্য একটি জুডিশিয়াল কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন কাজ শুরু করেই রংপুর গেছে। এ কমিশন বিদেশি বিশেষজ্ঞকে নিয়ে আসছে। বিদেশি এক্সপার্টও আসবে তদন্ত করে তারাও বলবে কী পেয়েছে, আর কী পায়নি। ফলে স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত হবে। এরপর আমরা জানতে পারব কে কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আন্দোলনকে উসকে দেওয়ার জন্য ভেতরে কেউ মেরে দিল কি না, নাকি পুলিশের গুলিতে না অন্যভাবে মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর তালিকায় অনেকের আগুনে ঝলসে যাওয়া দেহ পাওয়া গেছে। সেখানে আন্দোলনকারীরাই তো আগুন দিয়েছে। সেই দায় আপনি সরকারকে দেবেন। এভাবে বিভিন্নভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রকৃত হত্যাকারীকে ধরতে চাই। কিন্তু তদন্তের আগেই রায় দিয়ে সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে-সরকার খুনি। তাহলে বিচার তারা চাচ্ছে না, খুনিকে সামনে আনতে দিতে চাচ্ছে না। তারা যা চাচ্ছে সেটি পরিষ্কার-গত শনিবারের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। এই ঘোষণা অর্জন করতে চাচ্ছে সন্ত্রাস ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে। এখন সন্ত্রাসীদের সাধারণ মানুষ প্রতিহত করতে শুরু করেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম