উপার্জনের উৎস হারিয়ে দিশেহারা নাজমুলের পরিবার
খোন্দকার রুহুল আমিন, টেকেরহাট (মাদারীপুর)
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত নাজমুল হাসানের (২২) গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর সদরের চরগোবিন্দপুরে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। বেঁচে থাকার জন্য সরকারের সহযোগিতার অপেক্ষায় তারা। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।
সরেজমিন গেলে দেখা যায়, একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা নাজমা বেগম। শোকে পাথর বাবা সৈয়দ আবুল কায়েস। পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরাও কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। নিহত নাজমুলের পরিবারে মা-বাবা ও এক বোন রয়েছে।
স্বজনরা জানান, জীবিকার তাগিদে ছোটবেলা থেকে রাজধানীতে অবস্থান করেন নাজমুল। ফরাজী হাসপাতালের ফিজিওথেরাপি টেকনিশিয়ান হিসাবে এক বছর আগে চাকরি নেন তিনি। ১৯ জুলাই দুপুরে রামপুরার আফতাবনগরের বাসা থেকে ডিউটির উদ্দেশে বের হোন। গোলাগুলি ও সংঘর্ষের কারণে সড়কে যান চলাচল ছিল না। ফলে তিনি হেঁটে বনশ্রী এলাকার গোদারা ঘাটের সাঁকোর কাছে এলে পেটে গুলিবিদ্ধ হোন। গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে নাগরিক প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওইদিন রাতেই তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ২০ জুলাই দাফন করা হয় পারিবারিক কবরস্থানে।
নাজমুলের এ মৃত্যুতে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। পাশাপাশি অসহায় পরিবারটির পাশে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তারা।
বাবা আবুল কায়েস বলেন, নামজুল ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।
মা নাজমা বেগম বলেন, বাইরে গোলাগুলি হচ্ছে, অনেকবার নিষেধ করেছিলাম ডিউটি যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু আমার কথা শোনেনি। হতভাগা এভাবে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যাবে বুঝতেও পারিনি।
বন্ধু রাজীব হোসেন বলেন, পরিবার অসচ্ছল হওয়ায় নাজমুল ঢাকায় চলে যায়। ছুটিতে বাড়ি এলে আমরা দুজন একত্রে চলাফেরা করতাম। কী করে এমন মৃত্যু মেনে নেব আমরা?