যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী হলেন টিউলিপ সিদ্দিক
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। টিউলিপ সিদ্দিকের প্রধান দায়িত্ব হবে আর্থিক সেবা খাত নিয়ন্ত্রণ। যুক্তরাজ্যের আর্থিক সেবা খাতের নীতিনির্ধারণীতে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
গত মে মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছিলেন, লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে আর্থিক খাতে প্রতিযোগিতা ও প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
৫ জুলাই বাকিংহাম প্যালেস থেকে ফিরেই মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেন নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এরই মধ্যে তিনি নতুন মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকজনের নাম ঘোষণা করেছেন। লেবার এমপি অ্যাঞ্জেলা রেনারকে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ধারাবাহিকতায় ব্রিটেনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে নির্বাচিত এমপি টিউলিপকে নগরমন্ত্রী করা হলো।
যুক্তরাজ্যের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টিকে বিশাল ব্যবধানে হারায় টিউলিপের দল লেবার পার্টি। নির্বাচনে টানা চতুর্থবার জয় পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে তিনি লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। জয়ের পর টিউলিপ সিদ্দিক বলেছিলেন, ‘সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের দোয়ায় চতুর্থবার আমি নির্বাচিত হলাম। বাংলাদেশি কমিউনিটি সব সময় আমাকে সমর্থন করে। আমি তাদের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ যে, তারা এবারও আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’
মেয়ের জয়ে উচ্ছ্বসিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা বলেন, আমার মেয়ে আবার এমপি নির্বাচিত হলো। মানুষের সেবায় সে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। শুধু নির্বাচনের সময় নয়, সারা বছরই সে এলাকায় কাজ করে। সবার কাছে দোয়া চাই, সে যেন তার কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করতে পারে।
হ্যামস্টেড ও হাইগেট আসনে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন টিউলিপ। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। ৪১ বছর বয়সি টিউলিপকে লেবার পার্টিতে নতুন প্রজন্মের তুমুল সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ হিসাবে দেখা হয়। ২০১৫ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির নিরাপদ বা ‘সেফ সিট’ নয়-এমন আসনে মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারই বাজিমাত করেন টিউলিপ। এর আগে দুবার তিনি পার্টির ছায়া মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। নিরঙ্কুশ জয়ে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসায় এবার তিনি মন্ত্রিসভায়ও স্থান পাবেন, সেটা অনেকেই ধারণা করেছিলেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৬ সাল থেকে ছায়া শিক্ষামন্ত্রী, সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ার, নারী ও সমতা নির্বাচন কমিটির সদস্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুল, হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল স্কুল ও মিল হিল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি ও কিংস কলেজ লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ২০১১ সালে সরকার, রাজনীতি ও পলিসি বিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত টিউলিপ ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার পথচলা শুরু হয়।