৩৫টি ব্যাংকের ডেবিট ক্রেডিট কার্ডে কেনা যাবে কনকার পণ্য
মো. নুরুল আফছার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলেক্ট্রো মার্ট গ্রুপ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তর : ঈদুল আজহা আসন্ন। এই উৎসব উপলক্ষ্যে ফ্রিজ সরবরাহে আপনারা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
মো. নুরুল আফছার : আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা বেশ কিছু নতুন ডিজাইন ও মডেলের ফ্রিজ এই সময়ে বাজারে সরবরাহ করছি। গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন পণ্য পাওয়ার জন্য দেশব্যাপী আমাদের সব নিজস্ব শোরুম এবং দুই হাজারেরও বেশি পার্টনার ও ডিলার শোরুমে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করছি। এছাড়া গ্রাহকরা আমাদের ওয়েবপেইজের মাধ্যমে ফ্রিজ পছন্দ করে অর্ডার করতে পারেন। ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে আমাদের রয়েছে বিশেষ স্ক্র্যাচ কার্ড অফার। এই অফারে একজন কাস্টমার কনকা ও হাইকো ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এলইডি টিভি, ওভেন ও ওয়াশিং মেশিন ক্রয় করলে পাবেন একটি স্ক্র্যাচ কার্ড, যা ঘষে তারা জিতে নিতে পারেন গোল্ড জুয়েলারি ও কনকার এলইডি টিভিসহ অসংখ্য আকর্ষণীয় পুরস্কার। এছাড়া পণ্য কেনার ক্ষেত্রে প্রায় ৩৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডসহ নগদ এবং মাসিক তিন থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের পণ্য শোরুম, ডিসপ্লে সেন্টার ও ডিলারদের মাধ্যমে ক্রয় করা যায়। আমাদের নিজেদেরও একটি কিস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে নিলে ১২ মাস পর্যন্ত কিস্তি সুবিধা দিয়ে থাকি।
যুগান্তর : গত এক বছরে ফ্রিজের ব্যবহার কেমন বেড়েছে? ব্যবহার বৃদ্ধির পেছনে কী কী বিষয় কাজ করেছে?
মো. নুরুল আফছার : বিগত কয়েক বছর ধরে প্রতি বছরই ফ্রিজের ব্যবহার ৭-১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় রেখে এবং বাজার ধরে রাখতে আমরাও তাই সাশ্রয়ী মূল্যে আরও ভালো পণ্য ও সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল শতভাগ বিদ্যুতায়িত হওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, নগরায়ণের ফলে একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির ফলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারটা অনেক বেশি বিকশিত হচ্ছে। গ্রাহকের চাহিদা পূরণে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। এখন আমরা কমপ্লিট ম্যানুফ্যাকচারিং করি যেখানে ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ডের গায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ লাগানো হচ্ছে। দেশের মানুষের চাহিদা পূরণে আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে, ক্রেতা ও ব্যবহারকারীর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য ও মানানসই করে ফ্রিজ তৈরি করছি আমরা।
যুগান্তর : আপনার কোম্পানির ফ্রিজের কী কী বৈশিষ্ট্য ও সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
মো. নুরুল আফছার : কনকা ও হাইকো ফ্রিজের অনেক বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যে কারণে ভোক্তাসাধারণ কনকা ও হাইকো ফ্রিজ তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখবেন। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :
ফেস-আপ ফোমিং টেকনোলজি : কনকার ব্যবহৃত এই প্রযুক্তি ফোমিং কোষের আকার কমাতে সক্ষম। ফলে সর্বনিম্ন বিদ্যুৎ খরচ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য খাদ্য সংরক্ষণ করে।
অ্যাকটিভেটেড কার্বন ডিউডোরাইজার : এটি ব্যাকটেরিয়াকে ৯৯.৯% পর্যন্ত ডিঅ্যাকটিভ করে খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখে।
ওয়াইডেস্ট ও ডিপেস্ট ডিজাইন : কনকা ফ্রিজে ওয়াইডেস্ট ও ডিপেস্ট ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে ফ্রিজের ভেতরের জায়গা নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।
হিউমিডিটি কন্ট্রোলার : বক্সের সবজিগুলো যাতে দীর্ঘদিন ফ্রেশ থাকে তার জন্য কনকা ফ্রিজে হিউমিডিটি কন্ট্রোলার টেকনোলজি যোগ করা হয়েছে।
ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণ : কনকা ফ্রিজে ওয়াইড ভোল্টেজ রেঞ্জ যোগ করা হয়েছে। যাতে ১২৫ থেকে ২৬৫ ভোল্টেজ পর্যন্ত ইলেকট্রিসিটি আপডাউন করলেও আলাদা করে ভোল্টেজ স্টাবিলাইজারের প্রয়োজন হয় না।
১০০% ফুড গ্রেডেড প্লাস্টিক : খাবারের বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ এবং স্বাস্থ্য সুবিধা অক্ষুণ্ন রাখতে কনকা ফ্রিজে এ ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়।
অ্যান্টি-ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট : কনকা ফ্রিজে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্টি-ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট সমন্বয় করায় দরজায় কোনো ফাংগাল হবে না এবং এটি শতভাগ এয়ারটাইট।
ভিটামিন ফ্রেশ টেকনোলজি : এর ফলে কনকা ফ্রিজের ভেতর দীর্ঘদিন পর্যন্ত সবজিগুলো ভিটামিন ফ্রেশ থাকে।
ডোর অ্যালার্ম টেকনোলজি : এর ফলে কনকা ফ্রিজ ৩০ সেকেন্ডের উপরে খোলা থাকলে দরজা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সচেতনতামূলক অ্যালার্ম দেওয়া হবে।
স্মার্ট ইনভার্টার টেকনোলজি : এই প্রযুক্তিটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়, শব্দদূষণ রোধ এবং দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। ফলে ফ্রিজের স্থায়িত্ব বাড়ে এবং বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয়।
ডিইসি কুলিং সিস্টেম : দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার জন্য রয়েছে সর্বাধুনিক ডিইসি সিস্টেম এবং ফাইভ-ডি কুলিং সিস্টেম।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় : কনকার সব ফ্রিজ বিএসটিআই-এর ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং সমৃদ্ধ যা ৭১% বিদ্যুৎ খরচ কমাতে সহায়ক। এছাড়া রয়েছে ক্র্যাক প্রতিরোধী প্লাস্টিক। শতভাগ ফুড গ্রেড ম্যাটেরিয়াল দিয়ে ভেতরের বিভিন্ন অংশ বানানো হয়। কনকা ফ্রিজারের ট্রিপল মোড সমৃদ্ধ ডিজিটাল টেম্পারেচার কন্ট্রোল-যেখানে একই সঙ্গে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার এবং সুপারকুল সুবিধা নিশ্চিত করে। রয়েছে নান্দনিক ডিজাইনসমৃদ্ধ পুশ-পুল গ্লাস।
যুগান্তর : আমদানি বিকল্প শিল্প হিসাবে স্থানীয় ফ্রিজ প্রস্তুতকারকরা কেমন করছেন? পণ্যের মান বৃদ্ধি নিয়ে আপনাদের কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে?
মো. নুরুল আফছার : আমদানি বিকল্প শিল্প হিসাবে স্থানীয় ফ্রিজ প্রস্তুতকারকরা বেশ ভালো করেছেন। তারা দেশের ক্রেতা ও ব্যবহারকারীর চাহিদা ও দেশীয় পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে ফ্রিজ তৈরি করেন। ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশীয় পণ্য বিদেশি পণ্যের তুলনায় ভালো। বরং দেশে তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ক্ষেত্রে দেশের গ্রাহক ও ব্যবহারকারীর কাক্সিক্ষত প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই করে তৈরি করা হয়।
যুগান্তর : ঈদের মৌসুমে ফ্রিজের চাহিদা কেমন? আপনাদের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা কী?
মো. নুরুল আফছার : দেশের বর্তমান পরিবেশ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ফ্রিজের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য অনুকূল। ফ্রিজের বর্তমান বাজার মূল্য গ্রাহকদের খুবই হাতের নাগালে এবং সাধ্যের মধ্যে। ফলে বর্তমান মূল্যস্ফীতি ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স ফ্রিজ বিক্রির ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাবিত হয় না। তবে ফ্রিজ বিক্রির সবচেয়ে ভালো সময় বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান। যেমন-গ্রীষ্মের শুরুতে, রমজান, ঈদ, পূজা-পার্বণ ইত্যাদি ঘিরে এর চাহিদা অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। দেশের দুটি বড় উৎসব ঈদ ঘিরে বার্ষিক চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ ফ্রিজ এ সময়ে বিক্রি হয়। প্রতি বছর ফ্রিজের চাহিদা প্রায় ১০-১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। বাজারে কনকা ও হাইকো ব্র্যান্ডের চাহিদা যথেষ্ট ভালো। ঈদ ঘিরে আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে এবং এ সময়ে প্রতিটি পণ্যে বেশ ছাড় দেওয়া হয়।
যুগান্তর : ফ্রিজের বর্তমান দরদাম, কিস্তিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে পাঠকদের কিছু তথ্য দিন।
মো. নুরুল আফছার : ফ্রিজের বর্তমান বাজারমূল্য গ্রাহকদের খুবই হাতের নাগালে এবং সাধ্যের মধ্যে। কনকা ফ্রিজের দাম ক্যাপাসিটি, মডেল, ডিজাইন ইত্যাদি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আমাদের প্রায় ৭০টিরও বেশি মডেলের ফ্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪ হাজার ৯০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের ফ্রিজ রয়েছে। প্রায় ৩৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডসহ নগদ এবং মাসিক তিন থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে নিলে ১২ মাস পর্যন্ত কিস্তিতে কেনার সুবিধা দিয়ে থাকি।
যুগান্তর : আপনাদের বিক্রয়-পরবর্তী সেবা সম্পর্কে কিছু বলুন।
মো. নুরুল আফছার : ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে কনকা, হাইকো ও গ্রি ব্র্যান্ডের ফ্রিজে দেয়া হচ্ছে বিশেষ বিক্রয়োত্তর সুবিধা। কনকা, হাইকো ও গ্রি ব্র্যান্ড ফ্রিজের কম্প্রেসরের ১০ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি রয়েছে। অন্যান্য যন্ত্রাংশের রয়েছে দুই বছরের ওয়ারেন্টি। তাছাড়া পাঁচ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবাও দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের রয়েছে হান্টিং নাম্বার ১৬৬৪৯ কল সেন্টার সেবা। যে কোনো সেবার জন্য গ্রাহকরা উক্ত নাম্বারে কল করলে আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। পরিশেষে বলব, কনকা ও হাইকো ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ব্যবহার করুন। ফ্রেশ খাবার গ্রহণ করুন, নিশ্চিন্তে ও সুস্থ থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।