ভারতের কাছে হারই পাকিস্তানের নিয়তি
পারভেজ আলম চৌধুরী
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে (ছবিতে নেই) ফিরিয়ে আনন্দে উদ্বেল ভারতের জয়ের নায়ক ম্যাচসেরা জাসপ্রিত বুমরা -আইসিসি
কানাডার বিখ্যাত র্যাপার ড্রেক গ্রাহাম পাঁচ কোটি ভারতীয় রুপি বাজি ধরেছিলেন রোহিত শর্মাদের পক্ষে। বলেছিলেন, ভারত হারাবে পাকিস্তানকে। বাজিতে জিতে গেছেন তিনি। রোববার টি ২০ বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচে ছয় রানে পাকিস্তানকে হারাল ভারত। ভারতের এটি টানা দ্বিতীয় জয়, পাকিস্তানের টানা দ্বিতীয় হার। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম এদিন হয়ে উঠেছিল এক টুকরো ভারত ও পাকিস্তান। স্থানীয় মিডিয়া এ দিনটিকে আখ্যায়িত করেছিল ‘ভারত-পাকিস্তান দিবস’ হিসাবে। লো-স্কোরিং বৃষ্টিভেজা ম্যাচে ভারতের ১১৯-এর উত্তরে পাকিস্তান থামে সাত উইকেটে ১১৩ রানে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে চার ওভারে মাত্র ১৪ রানে তিন উইকেট নিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন ম্যাচসেরা জাসপ্রিত বুমরা। পাকিস্তানের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল।
টসজয়ী পাকিস্তান ১২০ তাড়া করতে ব্যর্থ হলো। সমীকরণ ছিল সহজ। ১২০ বলে ১২০ রান। বল প্রতি এক রান। কিন্তু বাবর আজম, উসমান খান ও ফখর জামান তিনজনই সমান ১৩ রানে আউট হলে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। সেই চাপ সামলাতে আর পারেননি রিজওয়ান, ফখর জামানরা। নিজের শততম টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে মোহাম্মদ রিজওয়ান যখন ৪৪ বলে ৩১ রানে বুমরার শিকার হন, পাকিস্তান তখন জয় থেকে ৪০ রান দূরে। হাতে ছয় উইকেট। ইমাদ ওয়াসিম আউট হন ১৫ রানে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ২০ ওভার শেষ করে সাত উইকেটে ১১৩ রানে। নাসিম শাহর জোড়া চারের পরও শেষ ওভারে ১৮ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি পাকিস্তান। পান্ডিয়া দুই উইকেট পান। ২০২১ টি ২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ভারতকে। ২০২২-এর আসরে চার উইকেটের জয়ে ভারত প্রতিশোধ নিয়েছিল। এবার সুযোগ হারাল পাকিস্তান। টসের তখনও ২০ মিনিট বাকি। এমন সময় শুরু হয় বৃষ্টি। প্রথমে ঝিরঝির করে হলেও ধীরে ধীরে বৃষ্টির দাপট বাড়ে। বৃষ্টির কারণে পিছিয়ে যায় টস। ম্যাচ শুরুর সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে টস হয়। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম টস জিতে ফিল্ডিং নেন। কিন্তু আবার বৃষ্টি শুরু হলে খেলা আরও পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে শুরু হয় খেলা। প্রথম ওভারে আট রান তোলে ভারত। শাহিন আফ্রিদিকে ছয় মারেন রোহিত শর্মা। কিন্তু এক ওভার হওয়ার পর আবারও শুরু হয় বৃষ্টি। বন্ধ হয়ে যায় খেলা। বৃষ্টির পর আবার খেলা শুরু হলে আউট হয়ে যান বিরাট কোহলি। নাসিম শাহর প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকানো কোহলি ওই ওভারেই ক্যাচ দেন উসমান খানকে। চার রান করেই দ্বিতীয় ওভারে আউট হন কোহলি। পরের ওভারে ফিরে যান রোহিত শর্মাও। তাকে তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি।
রউফকে ক্যাচ দেন ১২ বলে ১৩ রান করা রোহিত। চারে ব্যাট করতে নামা অক্ষর প্যাটেলকে পরিষ্কার বোল্ড করেন নাসিম শাহ। ১৮ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন অক্ষর। অক্ষরকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর নাসিমকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেন বাবর। অথচ, নাসিমের বিপক্ষে অস্বস্তিতে ছিলেন পন্ত। ১০ ওভারে ভারত ৮১ রান তোলে তিন উইকেট হারিয়ে। ভারত চতুর্থ উইকেট হারায় সূর্যকুমারের আউটে। হারিস রউফের বলের গতি বুঝতে না পেরে মোহাম্মদ আমিরকে সহজ ক্যাচ দেন সূর্যকুমার (৭)। নয় বলে তিন রান করে আউট হন শিবাম দুবে। তার উইকেট নেন নাসিম। হাফ সেঞ্চুরির পথে থাকা ঋষভ পন্ত সাজঘরে ফেরেন ৪২ রান করে। তাকে শিকার করেন আমির। রবীন্দ্র জাদেজা কোনো রান না করেই ফিরে যান। তার উইকেটও নেন আমির। ৯৬ রানে সাত উইকেট হারায় ভারত। পরপর দুই বলে আউট হন হার্দিক পান্ডিয়া (৭) ও জাসপ্রিত বুমরা (০)। বোলার হারিস রউফ। শেষ পর্যন্ত আরশদীপ সিং রানআউট হলে ভারত ছয় বল বাকি থাকতে ১১৯ রানে অলআউট হয়। নাসিম শাহ (৩/২১) ও হারিস রউফ (৩/২১) ছয় উইকেট সমান ভাগ করে নেন নিজেদের মধ্যে। দুটি উইকেট পান মোহাম্মদ আমির, একটি শাহিন আফ্রিদি। ভারতের ১০ উইকেটের নয়টিই নেন পাকিস্তানের পেসাররা, অন্যটি রানআউট। নাটকীয় ধসে মাত্র ৩০ রানে শেষ সাত উইকেট হারিয়ে টি ২০ তে এই প্রথম পাকিস্তানের বিপক্ষে অলআউট হলো ভারত।
(স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)