ছয় জেলায় হিট স্ট্রোকে ৬ জনের মৃত্যু
খরতাপে বিপর্যস্ত জীবনযাত্রা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চুয়াডাঙ্গা ও পাবনার উপর দিয়ে রোববারও বয়ে গেছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়ায় ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। দেশের বাকি জেলাগুলোতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে।
সিলেট ছাড়া দেশের কোথাও বৃষ্টির দেখা নেই। তবে রোববার সিলেটে মাত্র ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রায় তেমন প্রভাব ফেলেনি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের এসব তথ্যে স্পষ্ট যে, দেশের উপর দিয়ে বয়ে চলছে ভয়ংকর দাবদাহ। তীব্র গরমে আক্রান্ত সারা দেশের মানুষ। গরম সহ্যক্ষমতার বাইরে যাওয়ায় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। রোববার ছয় জেলায় হিট স্ট্রোকে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। হাসপাতালগুলোতে গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলোতে শয্যা খালি রাখার জন্য পরিচালকদের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কম প্রয়োজনীয় রোগী ভর্তি না করতে বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানে অনলাইনে ক্লাস চলবে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (মাউশি)।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য রয়েছে। এ কারণে তাপমাত্রার চেয়েও গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাইরে বের হলেই গরমের সঙ্গে আর্দ্রতা শরীরে জ্বালা ধরাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। রাস্তায় গাড়ি চলাচলও সীমিত হয়ে গেছে।
শ্রমজীবীসহ যাদের বের হতে হচ্ছে তাদের গরমে চরম কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। মুহূর্তে ঘামে ভিজে যাচ্ছেন। ঠান্ডা পানি, আখের রস, লেবুর শরবত খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করেছেন রিকশা, ভ্যান ও গাড়ির চালকদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রচণ্ড তাপে যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কের বিটুমিন (পিচ) গলে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় রোববার সর্বোচ্চ ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও শনিবার যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববারের মতো আজও সারা দেশে একই মাত্রায় গরম থাকবে। তবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। তীব্র গরমে রোববার বেলা ১১টায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা পুলিশ বক্সের সামনে মো. আবু হানিফ মিয়া (৩৪) নামের একজন রিকশাচালক হিটস্ট্রোকে মারা যান।
তিনি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার শিবপুর গ্রামের মো. করম আলীর ছেলে। দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান জানান, বেলা ১১টার দিকে আবু হানিফ মিয়া নামে ওই রিকশাচালক দক্ষিণ সুরমা পুলিশ বক্সের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মানিকগঞ্জে রোববার দুপুরে আলমগীর হোসেন আলম (২৮) নামে একজন ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ বেপারীপাড়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলার হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. শাজাহান আলী বলেন-হরগজ বাজার থেকে ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হরগজ বেপারিপাড়া নামক স্থানে পৌঁছালে ভ্যান থেকে টলে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলে হার্ট অ্যাটাকে ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন আলমের মৃত্যু হয়।
একইদিন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় মো. আফজাল তালুকদার (৪৫), হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ফেরদৌস মিয়া (৫০), মেহেরপুরের গাংনীতে শিল্পি খাতুন (৪৫) এবং পাবনার চাটমোহরে আলাউদ্দিন আলী আরিফ (৪৩) মারা যান।
হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ : তীব্র দাবদাহের কারণে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোববার জরুরি বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে হাসপাতালের পরিচালক ও অনলাইনে সিভিল সার্জনরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া হিট স্ট্রোকে আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নীতিমালা তৈরি করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই গরমে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল বয়স্ক এবং বাচ্চারা। এবার এমন একটা জলবায়ু পরিবর্তন হলো যে আমরা জীবনে কখনো শুনিনি যে দুবাই বিমানবন্দর পানিতে ডুবে গেছে। যাই হোক এটা প্রকৃতির নিয়ম। আমাদের এগুলো ফেস করতে হবে।’
তীব্র দাবদাহে বাচ্চাদের ঝুঁকি এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যখন মেসেজ এলো (হিট অ্যালার্ট), আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে গিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চা এবং বয়স্করা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওরাল স্যালাইনের কোথাও কোনো ঘাটতি হলে যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রকৃতির ওপর তো আমাদের কারও হাত নেই। এটা আমাদের রেডি রাখতে হবে। সভায় জানানো হয়, মহাখালীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আলাদাভাবে বেড রাখতে বলা হয়েছে।
হাসপাতালে রোগী বাড়ছে : রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস (ওসেক) ইউনিটে গিয়ে দেখা গেছে, ৫২৫ নম্বর শয্যায় রেহেনা আক্তার নামে এক রোগীকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। স্বামী রহমাতুল্লাহ বলেন, বড় বোন এখানে ভর্তি। তাকে দেখভাল করতে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন।
তীব্র গরমে স্ত্রীর সকাল থেকে বমি, শরীর জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথা, মাথাঘোরা ও হাত-পায়ে কামড়ানো শুরু হয়। দ্রুত এখানে নিয়ে আসি। চিকিৎসক-নার্সরা অবজারভেশনে রেখে ইনজেকশন দিয়েছে। এখন স্যালাইন চলছে। ওসেকের নার্সিং ইনচার্জ ইশরাত জাহান বলেন- সোমবার ৩১০, মঙ্গলবার ২৪০, বুধবার ২৭০, বৃহস্পতিবার ২৯০, শুক্রবার ৩০০, শনিবার ৩৬৭ এবং রোববার দুপুর পর্যন্ত ১৩৫ জন রোগী সেখানে গেছেন।
ওসেকের ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. মনিরা আক্তার বলেন, রোগীদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও শ্রমজীবী। যাদের ৫০ শতাংশই পেটের পীড়া, জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ার উপসর্গ আছে। অবজারভেশনে রেখে সুস্থ হলে রিলিজ দেওয়া হচ্ছে। তবে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রোগীকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মেডিসিন ডা. মো. আল আমিন যুগান্তরকে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ রোগীর চাপ বেড়েছে। গরমে যত ধরনের রোগব্যাধি দেখা দেয় তার সব উপসর্গ নিয়েই রোগীরা আসছেন। তিনি বলেন, বিশেষ করে হিট ইডিমা, হিট ক্র্যাম্প, হিট সিনকোপ, হিট এগজেশন ও হিট স্ট্রোক রোগী আসছেন।
হিট স্ট্রোকে বয়স্ক, শিশু, দীর্ঘমেয়াদে রোগাক্রান্ত স্থূল ও শ্রমজীবীরা ঝুঁকিপূর্ণ। আগে বহির্বিভাগে দৈনিক গড়ে ২ হাজার রোগী এলেও এখন তিন হাজারের মতো আসছে। ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, দাবদাহে নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সি রোগী হাসপাতালে ভিড় করছেন। ঢাকা ছাড়াও দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলো থেকে রোগী আসছে। ৩ থেকে ১২ বছর বয়সিরা বেশি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে-ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা সমস্যা নিয়ে দৈনিক গড়ে ৫০০ রোগী আসছে।
আইসিডিডিআরবির গবেষক সাইদা হক বলেন, অতিরিক্ত গরমে ঘাম, তৃষ্ণা ও ক্ষুধায় অনেকে বাইরের অনিরাপদ শরবত, জুস ও বাসি খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা, টাইফয়েড, নিউমোনিয়া, হেপাটাইটিস, জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশুদ্ধ তরল খাবার খাবেন। আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। হিট স্ট্রোক ঝুঁকি এড়াতে গর্ভবতী, কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগীদের অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বন্ধ : বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (ইংলিশ মিডিয়াম) শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঞার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে শ্রেণি কার্যক্রম ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ২৮ এপ্রিল থেকে শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাস : তীব্র দাবদাহে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা যায়, ঢাকা, জগন্নাথ, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তীব্র দাবদাহ (হিট ওয়েভ)-এর কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরীক্ষাসমূহ যথারীতি সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে প্রচলিত ১০ শতাংশ অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছে সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরিধান করা; যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা; বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করা; বিশুদ্ধ পানি পান করা : প্রয়োজনে লবণযুক্ত তরল যেমন-খাবার স্যালাইন ইত্যাদি পান করা এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয় যেমন-চা ও কফি পান থেকে বিরত থাকা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তীব্র দাবদাহে সোমবার থেকে ২৭ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সশরীরে সব ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে ক্লাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে।
স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সভাপতিত্বে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষা সশরীরেই হবে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের অন্যতম বাহন শাটল ট্রেন ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাস নিয়মিত সূচিতে চলবে। রোববার এক জরুরি সভা শেষে এসব সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস আজ সোমবার থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। ওই সময়ে অনুষ্ঠিতব্য সব পরীক্ষা যথারীতি চলমান থাকবে।
এদিকে অতি গরমে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক। রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দুটির অনলাইন পাঠদান শুরু হয়েছে। ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে অনলাইনে ক্লাস। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আহমেদ তাজমীনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে এনএসইউর ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস অনলাইন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব ক্লাস অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
তীব্র দাবদাহে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টি যেই এলাকায় অবস্থিত সেখানকার তাপমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।