Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

উপজেলা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা, ভোট ৮ মে * দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোট হবে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উপজেলা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপে ৫৯টি জেলার ১৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ আনুষ্ঠানিকতা শুরু করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ধাপের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। আর দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে কমিশন। যদিও এর আগে কমিশন থেকে প্রথম ধাপের ভোট ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে ও চতুর্থ ধাপে ২৫ মে ভোটগ্রহণের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার কমিশনের সভায় ভোটের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হলো। আসন্ন ঈদুল ফিতরসহ সরকারি কয়েকটি ছুটির সঙ্গে তফশিল সমন্বয় করতে গিয়ে ভোটের তারিখ পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় ভোটের নতুন তারিখ এবং প্রথম ধাপের পূর্ণাঙ্গ তফশিল চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ কমিশনের সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, প্রথম ধাপের ১৫২ উপজেলায় মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল। ভোটগ্রহণ ৮ মে। তিনি আরও জানান, প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলার মধ্যে ৯ জেলার ২২ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করবে কমিশন। বাকি ১৩০টি উপজেলায় কাগজের ব্যালটে ভোট নেওয়া হবে। ওইসব উপজেলায় ভোটের দিন সকালে ব্যালট পাঠানো হবে। ভোটগ্রহণ হবে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আগামীতে সব নির্বাচনে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, তফশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলো। বৃহস্পতিবারই নিজ নিজ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন থেকে তারা নির্বাচনের আইন ও বিধিমালা প্রয়োগ করতে পারবেন। তারা আরও জানান, উপজেলা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে নির্বাচন বিধিমালা এবং আচরণ বিধিমালার সংশোধনী প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই সংশোধনী অনুযায়ী, এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য ২৫০ জন ভোটারের স্বাক্ষরসূচক সই জমা দেওয়া লাগবে না। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে অনলাইনে। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন। করতে পারবেন গণসংযোগ। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর মাইকিং, পোস্টার লাগানোসহ অন্যান্য প্রচার শুরু করবেন।

উপজেলা নির্বাচনের প্রচারে রঙিন পোস্টার ব্যবহারে কোনো বাধা নেই জানিয়ে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হবে প্রচারণা। তবে এর আগে প্রার্থীরা অনলাইনে এবং ৫ জন মিলে জনসংযোগ করতে পারবেন।

২২ উপজেলায় ইভিএমে ভোট : কমিশন বৈঠকের পর অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ইসির হাতে থাকা ৪৫ হাজার ইভিএম ভালো আছে। ওইসব ইভিএম দিয়ে প্রথম ধাপের ২২টি উপজেলায় ভোট করতে পারব। এসব উপজেলা ৯টি জেলায় অবস্থিত। সেগুলো হচ্ছে-সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও কাজিপুর; পাবনার সাঁথিয়া, সুজানগর ও বেড়া; যশোরের মনিরামপুর ও কেশবপুর; পিরোজপুরের সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানী; মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও হরিরামপুর; শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ; জামালপুরের সদর ও সরিষাবাড়ী; চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও দক্ষিণ এবং কক্সবাজারের সদর, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী।

প্রথম ধাপে কাগজের ব্যালটে যেসব উপজেলায় ভোট : ১৩০ উপজেলায় কাগজের ব্যালটে ভোট হবে। সেগুলো হচ্ছে-রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী; ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর, নীলফামারী জেলার ডোমার ও ডিমলা; দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর ও বিরামপুর; লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা; রংপুর জেলার কাউনিয়া ও পীরগাছা; কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, চর রাজিবপুর ও চিলমারী এবং গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ও ফুলছড়ি।

রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল, কালাই ও আক্কেলপুর; বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও গাবতলী; চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট; নওগাঁ জেলার ধামইরহাট, পত্নীতলা, মহাদেবপুর ও বদলগাছী এবং রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি ও তানোর; নাটোর জেলার সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া।

খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলার সদর ও মুজিবনগর; কুষ্টিয়া জেলার খোকসা, সদর ও কুমারখালী; চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর ও দামুড়হুদা, ঝিনাইদহ জেলার সদর ও কালীগঞ্জ; মাগুরা জেলার সদর ও শ্রীপুর; নড়াইল জেলার কালিয়া; বাগেরহাট জেলার সদর, রামপাল ও কচুয়া এবং সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর। বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলার সদর ও বাকেরগঞ্জ।

ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলার দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ; গোপালগঞ্জ জেলার সদর, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গীপাড়া; নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর ও বন্দর; গাজীপুর জেলার সদর, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া; রাজবাড়ী জেলার কালুখালী ও পাংশা; ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন, মধুখালী ও সদর; মাদারীপুর জেলার সদর, শিবচর ও রাজৈর; নরসিংদী জেলার সদর ও পলাশ, টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী, মধুপুর ও গোপালপুর; মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর ও গজারিয়া এবং কিশোরগঞ্জ জেলা সদর, হোসেনপুর ও পাকুন্দিয়া।

ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর; শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী এবং নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা।

সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই ও শাল্লা; সিলেট জেলা সদর, বিশ্বনাথ, গোলাপগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা; মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং।

চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণাবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও সরাইল; কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, লাঙ্গলকোট ও মেঘনা; ফেনী জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী; নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া; লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই, সীতাকুণ্ডু ও সন্দ্বীপ; খাগড়াছড়ি জেলার মনিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা; রাঙ্গামাটি জেলার সদর, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বরকল; বান্দরবান জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, থানছি ও আলীকদম।

তফশিল হয়নি ঝিনাইদহ-১ আসনের : ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন কমিশন সভায় আলোচনা হলেও এই ভোটের তফশিল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে এই ভোটের তফশিল জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অশোক কুমার দেবনাথ। এ উপনির্বাচনে ১১ মে বা ৫ জুন ভোটগ্রহণের তারিখ প্রস্তাব করেছিল ইসি সচিবালয়। সংসদ-সদস্য মো. আব্দুল হাই মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়।

নির্বাচনি ব্যয় জমা দিতে ইসির তাগিদ : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনি ব্যয় জমা দিতে তাগাদা দিয়েছে ইসি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে দলগুলোর নির্বাচনি ব্যয় জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সাংবিধানিক এ সংস্থা। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম