পালংখালীতে উত্তেজনা ঘুমধুম সীমান্ত শান্ত
বিজিপির ১০০ সদস্যকে টেকনাফে স্থানান্তর * পাঁচ সদস্যের উপজাতি পরিবারকে পুশব্যাক!
কক্সবাজার ও বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত চলছে। তবে এ সংঘাতের রেশ বাংলাদেশ সীমান্তে তেমন একটা পড়েনি। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত শান্ত থাকলেও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তে বুধবার রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, বুধবার দুপুরের পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সীমান্তে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। দুদিন ধরে উপজেলা সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকায় সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। বুধবার সকালে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ঘুমধুম-তুমব্রু ও জলপাইতলী সীমান্তের ২৪৩ জন ঘরে ফিরে গেছেন। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাওয়া লোকজনও ফিরতে শুরু করেছেন। সীমান্তবর্তী তুমব্রু বাজারে দোকানপাট খুলেছে। লোকজনের আনাগোনাও বেড়েছে।
এদিকে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির ১০০ সদস্যকে টেকনাফের হ্নীলাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বিজিবির গাড়িতে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, প্রশাসনিক সুবিধা বিবোচনায় তাদের টেকনাফের হ্নীলাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে বাইশফাঁড়ি সীমান্তপথে অবৈধ অনুপ্রেবেশকারী পাঁচ সদস্যের উপজাতি পরিবারকে বিজিবি পুশব্যাক করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি।
উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন। সেখানকার লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার কয়েকটি মর্টারশেলের আওয়াজ ভেসে এসেছে। এতে নতুন করে তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, গুলির বিকট শব্দে আমি আতঙ্কিত হই। পালংখালীর রহমতের বিল এলাকার গিয়াস উদ্দিন (৬৫) বলেন, গুলির শব্দে রাতে অনেকের ঘুম ভেঙে গেছে। কেউ কেউ ঘর থেকে বের হয়ে দিগ্বিদিক যেতে থাকেন। তবে রাত ২টার পর গোলাগুলির শব্দ আসেনি।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১০-১২টা গুলির শব্দ এবং ২-৩টি মর্টারশেলের আওয়াজ শোনা গেছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বুধবার রাতের গোলাগুলি বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও মংডুর সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নবী হোছাইনের আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির (এআরএ) মধ্যে হয়েছে। আরাকান আর্মির পক্ষ নেওয়াকে কেন্দ্র করে আরএসও ও এআরএ নতুন করে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে।