Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

কাল ফের শান্তি সমাবেশ

ভোটের পরও রাজপথে ছাড় দেবে না আ.লীগ

নির্বাচনের আগের মতোই বিএনপির কর্মসূচির দিনে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীনরা

Icon

হাসিবুল হাসান

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভোটের পরও রাজপথে ছাড় দেবে না আ.লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরও বিএনপিকে রাজপথে কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। ভোটের আগের মতো বিএনপির সামনের দিনের কর্মসূচির দিনগুলোতে নিজেরাও নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এরই অংশ হিসাবে আগামীকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের দিন শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে এদিন রাজধানীর প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে এবং পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি অতীতের মতোই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করতে পারে। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সামনের দিনগুলোতেও রাজপথে সজাগ ও সতর্ক থাকবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির কর্মসূচি তো জনসম্পৃক্ততা হারিয়েছে। তাদের কর্মীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের কর্মসূচিতে দিনে দিনে লোক আরও কমতে থাকবে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে আমরা সমাবেশ কর্মসূচি পালন করি না। শনিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির অতীতের সব কর্মসূচি জনগণের সমর্থন না পাওয়ায় ভেস্তে গেছে। এখন তারা আবার শুরু করছে। তারা তো সব সময়ই বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও শঙ্কা তৈরি করতে চায়। তিনি আরও বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করব। উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও সক্ষমতা অর্জন এবং আমরা যে ইশতেহার ঘোষণা করেছি, তা বাস্তবায়নের পথে বিএনপি-জামায়াতের মতো যারাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের শান্তির সংগ্রাম চলবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি যে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে, এটা তাদের হটকারী সিদ্ধান্ত। ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। তার আগে এই কালো পতাকা মিছিল সাংঘর্ষিক। তাদের এই কর্মসূচি দেশের জনগণ মেনে নেবে না। ইনশাআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি যদি কোনো হটকারী সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবিলা করব।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগে থেকে বিএনপি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো সহিংসতা করতে না পারে সেজন্য একইদিনে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থেকেছে আওয়ামী লীগ। যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তখন থেকেই দাবি করা হয়েছে এগুলো তাদের পালটাপালটি কর্মসূচি নয়। তাদের মতে, আন্দোলনের নামে নির্বাচন ঘিরে বিএনপি যেন কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই রাজপথে সতর্ক থেকেছে তারা। ভোটের পরেও একই পথে হাঁটতে শুরু করল ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপি যেন আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য নিজেরাও নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

এরই অংশ হিসাবে আগামীকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ যুগান্তরকে জানান, শান্তি সমাবেশে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। তিনি বলেন, বেলা ২টা থেকে প্রতি থানা ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিলসহ দলে দলে সমাবেশে যোগ দেবেন। বেলা তিনটায় প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখবেন। দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন বলেও জানান তিনি।

৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় ও টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটি হবে আওয়ামী লীগের প্রথম শান্তি সমাবেশ। এই সমাবেশ সফলে প্রস্তুতিও শুরু করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করেছে সংগঠনটি। দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, হাজি মো. শহীদ, সাজেদা বেগম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।

জানা গেছে, নির্বাচনের পরের এই শান্তি সমাবেশে বড় শোডাউন করতে চায় আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে সমাবেশে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড এবং ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণের অন্তর্গত সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও এতে অংশে নেবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দলীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে হাজির হবেন।

এদিকে শনিবার আলাদা কর্মসূচি না থাকলেও প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে সতর্ক থাকবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান যুগান্তরকে জানান, এ বিষয়ে তাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে কেউ যেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা অতীতেও সব সময় সজাগ ও সতর্ক ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম