মাগুরায় ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ গুলি
মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মাগুরায় জেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিনিধি সভায় অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে আগ্নেয়ান্ত্র হাতে এক যুবককে গুলি করতে দেখা যায়। বুধবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুর রহমান হাসুর নেতৃত্বে একটি মিছিল পুলিশ লাইন এলাকা থেকে বের হয়। ইসলামপুরপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে কমিটি গঠন উপলক্ষ্যে আয়োজিত দলীয় প্রতিনিধি সভায় যাচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। তাদের মিছিলটি চৌরঙ্গী মোড়ে পৌঁছলে সমবায় ব্যাংক এলাকায় অবস্থানরত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরাও ইটপাটকেল ছোড়ে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফা ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে কালো মাস্ক পরা এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বিএনপি কর্মীদের লক্ষ্য করে একাধিকবার গুলি ছুড়তে দেখা গেছে।
সংঘর্ষ চলাকালে শহরের জামে মসজিদ রোড থেকে সরকারি কলেজ রোড পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।
এ বিষয়ে জেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম জাহিদ বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। তারা পুলিশের সামনেই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। এতে যুবদল কর্মী বিল্লালসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের কোনো কর্মী নয়, বরং নাজমুল নামে শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকার এক বিএনপি কর্মী সুপার মার্কেটের সামনে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে। ওই এলাকার বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করলেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি করা যুবকের নাম শাহিন। তার বাড়ি শহরের স্টেডিয়ামপাড়া। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের কোনো তথ্য আমরা পাইনি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো পক্ষই এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনিও জানান, সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের তথ্য তারা জানেন না।