Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ

গাড়ি চলাচল শুরু কাল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গাড়ি চলাচল শুরু কাল

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ। প্রথম ধাপে রাজধানীর বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এটিই ঢাকার বুকে প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। অর্থাৎ কোনো ধরনের ট্রাফিক সিগনাল ছাড়াই নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র ১২ মিনিট। এর আগে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে চালু করে বর্তমান সরকার। এই হিসাবে বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয় এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তৈরি করা এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ শনিবার বিকালে কাওলাপ্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। সেখান থেকে তিনি গাড়িতে চড়ে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবেন। টোল পরিশোধ করে যাবেন আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুবিধার্থে রাজধানীতে যান চলাচলে ডাইভারশন আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানান ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার। গতকাল তিনি যুগান্তরকে বলেন, গাড়ি চলাচলের জন্য যে অংশ খুলে দেওয়া হচ্ছে সেখানকার শেষ মুহূর্তের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, রোববার সকাল থেকেই নগরবাসী ওই অংশে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন।

সেতু বিভাগ জানিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে আজ উদ্বোধন করা হলেও সর্বসাধারণের গাড়ি চলাচল শুরু হবে কাল রোববার থেকে। এদিন সকাল ৬টায় এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হবে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই এক্সপ্রেসওয়ে খোলা থাকবে। উত্তরা থেকে ফার্মগেটগামী গাড়ি তিনটি স্থান থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ঢুকতে পারবে। সেগুলো হচ্ছে-হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ পার্শ্বে অবস্থিত কাওলা, প্রগতি সরণি (কুড়িল) এবং আর্মি গলফ ক্লাব।

এসব স্থান থেকে ওঠা গাড়ি বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের পার্শ্বে নামতে পারবে। অপরদিকে উত্তরাগামী গাড়ি বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর ও দক্ষিণ লেন এবং বনানী রেলস্টেশনের সামনে থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে পারবে। এসব গাড়ি মহাখালী বাস টার্মিনাল, বনানী, কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সামনে নামতে পারবে।

এজন্য এয়ারপোর্টে দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ও ফার্মগেটে একটি র‌্যাম্পও রয়েছে। এই ১৫টি র‌্যাম্পের মধ্যে মহাখালী ও বনানী অংশে দুটি র‌্যাম্প আপাতত বন্ধ থাকবে। বাকি ১৩টি র‌্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি প্রবেশ ও বের হতে পারবে। তবে যেসব স্থানে গাড়ি নামবে, সেসব পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এক্সপ্রেসওয়ে যেই দূরত্বেই চলুক না কেন, প্রত্যেক গাড়িকে সমান টোল পরিশোধ করতে হবে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও হালকা ট্রাককে ৮০, বাস ও মিনিবাস ১৬০, মাঝারি ট্রাক ৩২০ এবং ভারী ট্রাক বা ট্রেইলরে ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। অর্থাৎ বিজয় সরণি থেকে উঠে মহাখালী নামলেও এই হারে টোল দিতে হবে। আবার বিমানবন্দর গেলেও টোলের হার একই থাকবে। এই হারে টোল আদায় করায় কতসংখ্যক গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবে তা নিয়ে সংশয়ে আছেন সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে রাত ও ছুটির দিনগুলোতে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী কম হবে বলে ধারণা তাদের। ছয়টি পয়েন্টে টোল আদায় করা হবে। পয়েন্টগুলো হচ্ছে- বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানীর দুটি, মহাখালী ও তেজগাঁও।

এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে কিছু বিধিনিষেধ থাকছে। পথচারী, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ি এতে উঠতে পারবে না। চলাচল করতে পারবে চার চাকার গাড়ি। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা যাবে না।

প্রকল্প সূত্র জানায়, আগামী জুনের মধ্যে পুরো এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হবে। তখন বিমানবন্দরের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কতুবপুর পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে যাতায়াত করা হবে। তখন এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১৯.৭৩ কিলোমিটার। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার জন্য ৩১টি র‌্যাম্প থাকবে। এসব র‌্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যানজট এড়িয়ে সহজেই নগরবাসী ঢাকার বাইরে যাতায়াত করতে পারবেন।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫.৯৬ শতাংশ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম