নৌপ্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কখনোই হস্তক্ষেপ করবে না চীন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ উল্লেখ করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন কখনোই হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি বলেন, যে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। আর নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশ কারা পরিচালনা করবে বাংলাদেশের জনগণই সেটি নির্ধারণ করবে। বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ওই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আগেই জোর দিয়ে বলেছি, আমরা একটি বিষয়ে এখনো অবিচল যে, চীন কখনোই কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের নিজেদের বিষয়।
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মোংলা বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছি। এই বন্দর ও পদ্মা সেতু কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের ভালো সুযোগ আমাদের কাছে আছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চায় চীন। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি নিয়ে বার্তা দিতেই আমি এখানে এসেছি।
মোংলা বন্দর উন্নয়নে চীন কী ধরনের সহায়তা দিতে চায়-জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকীকরণে সহায়তা করবে চীন। বৈদ্যুতিক যান উৎপাদনে বিশ্বে আমরাই সবচেয়ে এগিয়ে। তাহলে আমরা কেন মোংলা বন্দরে বৈদ্যুতিক ও ব্যাটারি প্ল্যান্ট স্থাপন করব না। আইসিটি, সৌরবিদ্যুৎ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণেও বাংলাদেশকে চীন সহায়তা করতে পারবে বলে জানান তিনি। ইয়াও ওয়েন বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশে বিপুল ফল উৎপাদিত হয়। এতে বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে সহায়তা করতে পারে চীন। কাজেই মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে আমরা অনেক সম্ভাবনা দেখছি; যা নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা (চীন) যে ভূমিকা রাখছে, যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে তারা একটি প্রকল্প দিয়েছেন। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের শিল্পের ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগ করতে চায়। কৃষি ও তৈরি পোশাক শিল্প খাতে ভূমিকা রাখতে চায়। তিনি বলেন, আমাদের শিপিং লাইনে চীনের কাছ থেকে জাহাজ নিয়েছি। আরও চারটি চুক্তির পর্যায়ে আছি। এগুলো দ্রুত করার বিষয়ে কথা হয়েছে। যেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মসৃণ হয়। বাংলাদেশের নৌখাতে আরও বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী চীন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বটা তারা আরও বেশি এগিয়ে নিতে চায়, আমরাও সেটা চাই। আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভূমিকা খুবই পরিষ্কার। আমরা চাই, বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে দেশ কারা পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তা-ই চান।
তিস্তা সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ২ আগস্ট রংপুরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষের সামনে তিনি বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। এরপর তো আর কথা থাকে না।
বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ কমে গেছে কিনা-এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীনের বিনিয়োগ কমে গেছে না বেড়ে গেছে, তা বড় কথা নয়। কথা হচ্ছে, আমাদের প্রকল্পগুলো ঠিকমতো চলছে কিনা। আমরা দেখছি, চীনের যেখানে বিনিয়োগ আছে, সেখানে প্রকল্পগুলো ঠিকমতো চলছে। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন এগিয়ে নিচ্ছে সরকার।